কামরুল হাসান মামুন : আমার কলেজের নাম বাজিতপুর কলেজ। এখানেই আমি উচ্চ মাধ্যমিক পড়ি। আমার সেই কলেজের একজন শিক্ষক অধ্যাপক বিমল সরকারের একটি লেখা সম্প্রতি দৈনিক কালের কণ্ঠে প্রকাশিত হয়েছে। লেখাটির শিরোনাম ‘সত্যোপলব্ধি এবং যত্রতত্র অনার্স’। অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং দেশের শিক্ষা নিয়ে যারা ভাবেন তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খোরাক। এই লেখায় কিছু পরিসংখ্যান দিয়েছেন, যা জেনে আমি স্তম্ভিত। স্বাধীনতার পূর্বে ষাটের দশকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত সারা দেশে (সাবেক পূর্ব পাকিস্তান) বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অনার্স পড়ার বন্দোবস্ত ছিলো হাতে গোনা সাত-আটটি কলেজে। বর্তমানে সারাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনুমানিক ৮০০ কলেজে বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। অনার্স পড়ানো মানে এগুলো একেকটি আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ই। কী ভয়ানক ব্যাপার। দেশজুড়ে এখন এমন কোনো জেলা নেই যেখানে পাঁচ-সাতটি কিংবা ১০-১২টি, এমনকি তারও বেশিসংখ্যক কলেজে অনার্স চালু নেই। উপজেলায় উপজেলায়, এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামের কলেজেও এখন অনার্স পড়তে ও পড়াতে দেখা যায়।
এ সব কিছুই বিমল সরকারের লেখা থেকেই জানলাম। আমি নিশ্চিত যে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এ রকম বীঢ়ষড়ংরাব মৎড়ঃিয পৃথিবীতে আর কোথাও নেই। আরও অনেক খারাপ ক্ষেত্রে মত এই বিষয়েও বিশ্বে আমরা এক এবং অদ্বিতীয়। তার উপর ১৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়। কী ভয়াবহ চিত্র ভাবতে পারেন? এই বিপুল পরিমাণ কলেজে অনার্স পড়ার মতো শিক্ষক কিংবা কোনোরূপ ল্যাব সুবিধা আছে? আরে ঢাকার মধ্যে অবস্থিত বিখ্যাত কলেজ যেমন ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ ইত্যাদি কলেজেও তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। এ সব খোলার কেবল একটি অর্থই আছে সেটি হলো অর্থ কামানো আর সার্টিফিকেট বিলানো। ফলে সার্টিফিকেটধারী পঙ্গু বেকার তৈরির এক মহোৎসব চলছে দেশে। একটি দেশে এ রকম বলদামি চলে কীভাবে আর চলতে দেওয়াই বা হয় কীভাবে? পুরো একটা প্রিমিটিভ জাতি। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :