শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারী, ২০২০, ১২:০৮ দুপুর
আপডেট : ২৩ জানুয়ারী, ২০২০, ১২:০৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ওদের অনেক মেরেছি কিন্তু কোনো কথা স্বীকার করেনি, বললেন জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি

জাগোনিউজ ডেস্ক : জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে মুখ ফসকে বলে ফেলেন, শালাদের অনেক মেরেছি। কিন্তু একটাও(কেউ) কোন কথা স্বীকার করেনি। একজনের নামও বলেনি। নির্যাতনকারী আনোয়ার হোসেন ও আমির হামজা দুজনই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারী।

নির্যাতনের বিষয়ে হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা বলেন, আমরা তাদের মারধর করিনি। শুধু জিজ্ঞাসা করেছি। তাদের কাছ থেকে শিবিরের দুটি বই উদ্ধার করেছি। তবে বইয়ের ছবি ও নামের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে আমির হামজা কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১১টার দিকে জহুরুল হক হলের গেস্টরুমে ছাত্রলীগের নিয়মিত গেস্টরুম চলছিল। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মুকিম চৌধুরীকে শিবির সন্দেহে গেস্টরুমে ডাকা হয়। সেখানে হল শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা তাদের অনুসারীদের দিয়ে মুকিমকে প্রথমে মানসিকভাবে চাপ দেয়। এতে স্বীকার না করায় তাকে লাঠি, স্টাম্প ও রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে থাকে।
পরে তার ফোন কললিস্ট দেখে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানওয়ার হোসেনকে গেস্টরুমে আনা হয়। সেখানে তাকেও বেধড়ক মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতারা। মারধর সহ্য করতে না পেরে উভয়ই মেঝেতে শুয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দীন এবং একই বর্ষের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আফসার উদ্দীনকে ধরে গেস্টরুমে আনা হয়। সেখানে রাত ২টা পর্যন্ত তাদের ওপর নির্যাতন করেন ছাত্রলীগ নেতারা। পরে রাত ২টার পর তাদের প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

নির্যাতনের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতারা দাবি করেছেন, আহত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিবির সংশ্লিষ্ট বই উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তার কোনো নাম অথবা প্রমাণ দিতে পারেনি তারা। এমনকি শিবির সন্দেহে তাদের গেস্টরুমে ডাকা হলেও তাদের কাছে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি ছাত্রলীগ।

জানা যায়, ঢাকা মেডিকেলে চাঁদা চেয়ে এক ওষুধ ব্যবসায়ীকে মারধরের কারণে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ থেকে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল। এর কিছুদিন পর ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাকে হল থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। পরে ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের ছত্রচ্ছায়ায় আবার হলে উঠে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার চার মাস না পেরুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে চার শিক্ষার্থীকে আবরারের স্টাইলে রাতভর নির্যাতন করেছে ছাত্রলীগ। নির্যাতনের পর আহত শিক্ষার্থীদের হল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও পুলিশের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় নেয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীদের রাতের বেলায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় পুলিশ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়