চিররঞ্জন সরকার : দেশে এখন বিরোধীদল নেই। সেমি-বিরোধী দলও নেই। কমিউনিস্ট শক্তি নেই। সংঘবদ্ধ কৃষক-শ্রমিকের দল নেই। মধ্যবিত্তের শক্তিশালী সিভিল সোসাইটিও নেই। এ সবই কিন্তু কাগজে-কলমে আছে, কিন্তু বাস্তবে নেই। তবে বর্তমানে যা আছে তাহলো একদল প্রবল সক্রিয় ফেসবুকার। যাদের আবার ফেসবুকের বাইরে কোনো জীবন নেই, জগৎ নেই। বুলি আর বুলিং ছাড়া তাদের আর কোনো তৎপরতা নেই। এই যে ‘ফেসবুক ক্লাব’ ছাড়া দেশে অন্য কোনো সংঘ-সংগঠন ‘নেই’ সেটাই বর্তমান বিরাজনীতিকরণের সবচেয়ে বড় অর্জন। এ রকম অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি তখন হয় যখন গোটা সমাজে বহু বছর ধরে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া চলতে থাকে সেই বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া তখন সম্ভব হয়, যখন সৎ ব্যক্তি রাজনীতি ছাড়ে। শঠ ব্যক্তিরা সেই জায়গা পূরণ করে। দাবির রাজনীতির ভাষা হারিয়ে যায়। দাবানোর ভাষা প্রকট হয়ে উঠে।
রাজনীতির মৃত্যু ঘটিয়ে হিংসা সমাজকে গ্রাস করে। গণতান্ত্রিক দাবির উপর ভিত্তি করে, সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এবং সুবিধাবাদকে প্রশ্রয় না দিয়ে দীর্ঘ গণআন্দোলন যখন বছরের পর বছর না হয়, তখন সমাজে হক কথা বলার জন্য দুরবিন দিয়ে লোক খুঁজতে হয়। এই রকম সন্ধিক্ষণে মানুষ তার অধিকারবোধ হারায়। আত্মসম্মান হারায়। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার মতো এতোটুকু সাহস আর অবশিষ্ট থাকে না। চারদিকে ধান্দাবাজ ও ধাপ্পাবাজদের রমরমা হয়। মেরুদ- হারিয়ে সরীসৃপে পরিণত হওয়া চাটুকার ও স্তাবকদের উদ্দাম উদ্বাহু নৃত্য বাড়তে থাকে। এমতাবস্থায় কিছু মানুষ তখন আরও রাজনীতিবিমুখ হন, রাজনীতির কথা শুনলে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন, ‘রাজনীতি খারাপ’ বলে এক সহজ নিরাশাবাদী সিদ্ধান্তে উপনীত হন। আমাদের দেশে বহু বছর ধরে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া চলেছে। যা শুরু হয়েছিলো সামরিক শাসকদের হাত ধরে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :