মাহফুজুর রহমান : রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আমলাদের দ্বন্দ্ব এ দেশে চিরকালই ছিলো। স্বাধীনতার আগেও ছিলো স্বাধীনতার পরেও ছিলো। কিন্তু তারা মিলে গিয়েছিলো মঈনউদ্দিন ও ফখরুদ্দিনের আমলে। কারণ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আমলে তারা মিলেমিশে এ দেশের ব্যাংক লুটপাট করে নিয়ে গিয়েছিলেন বিদেশে। কানাডার বেগম পাড়া, মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোম, ইদানীং আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গ রাজ্যে তারা ফ্লাট বাড়ি, গাড়ি, দুবাইয়ে সিঙ্গাপুরে মার্কেটের হিড়িক। এখন এই হিড়িকের ষোলোকলা চলছে। এই গ্রুপের লুটেরারা অবশ্য অন্যান্য দল থেকে এখন সরকারি দলে এসেছে শুধু সুবিধা পাওয়ার জন্য, কোনো আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে নয়। অবশ্য লুটেরাদের কোনো আদর্শ থাকেও না, অর্থ লুটপাট করাই তাদের আদর্শ।
মঈনউদ্দিন ও ফখরুদ্দিনের আমলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা একত্রিত হয়েছিলো সেই জনতার সামরিক সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাইতে, সঙ্গে যোগ দিয়েছিলো এই দেশের আমলা সম্প্রদায়। তারা সফল হয়েছিলো। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মানি লন্ডারিংয়ের জন্য অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিলো, অনেকের কাছ থেকে অর্থ উদ্ধার করে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়েছিলো। শোনা গিয়েছিলো যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এমন ক্ষতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ-ব্যবসায়ীরা মামলা দায়ের করে অর্থ উদ্ধার করবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে তারা আদালতে যাওয়ার সাহস পেলো না, আজও পায়নি।
একটি বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব নেই আর তাহলো দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং। দুই নেত্রীর বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ ছিলো। কিন্তু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাগুলো ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ যেন উঠিয়ে নিয়ে বলা শুরু করলো যে এ সব ভুয়া, তেমনিভাবে বিএনপি যদি কখনো ক্ষমতায় আসে তাহলে বেগম জিয়ার মামলাগুলো অবশ্যই তুলে নেওয়া হবে আর বলা হবে সে সব আওয়ামী লীগ বিদ্বেষপূর্ণভাবে ভুয়া মামলা দায়ের করেছিলো। আর আওয়ামী নেতাদের মিশে যাওয়া মামলাগুলো চালু করে গীবত গাওয়া শুরু করবে। কী কন্ট্রাডিকশন। ফেসবুক থেকে