সাদাত হোসাইন : সফল মানুষদের প্রতি আমি একধরনের তীব্র কৌতূহল অনুভব করি। সেই কৌতূহল মূলত ওই সফল মানুষের আড়ালের ব্যক্তি মানুষটাকে জানার। আমার সবসময়ই জানতে ইচ্ছা হয়, মানুষটার ম্যাজিক আসলে কী? প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান তাদের একজন, যার প্রতি আমার তীব্র অনুসন্ধিৎসা। আমার খুব জানতে ইচ্ছা হয় যে তার ম্যাজিকটা কী? যখনই কিছু ছুঁয়েছেন, তখনই তা কী করে অমন সোনা হয়ে উঠেছে। সেই কৌতূহল খানিকটা মিটলো গত মাসে। ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে সেদিনই আমার প্রথম দেখা এবং আমাদের সুদীর্ঘ গল্প, কথোপকথন, আড্ডা। সেই আড্ডায় আমি মুগ্ধ হয়ে তার গল্প শুনেছি। ভাবনা শুনেছি। শৈশবের স্মৃতিময়তায় তিনি কাতর হয়েছেন। আমিও।
আমি যেমন তন্ময় হয়ে শুনেছি তার স্মৃতিময় শৈশবের গল্প, তিনিও ঠিক একই আগ্রহে শুনেছেন আমার দুরন্ত শৈশবের দুরন্তপনার গল্প। অথচ আমার ভাবনাটা ছিলো এমন যে, এতো বড় একজন মানুষ, নিশ্চয়ই খুব গম্ভীর ভঙ্গিতে কথা বলবেন, কিংবা গ্রাহ্যই করবেন না। কিন্তু ঘটলো পুরো উল্টো। পরে তার তুমুল ব্যস্ততার মধ্যেও দারুণ আন্তরিকতায় কথা হয়েছে ফোনেও। এতো সহজ ভঙ্গিতে কথা বললেন যে তাতে বরং যেন আরও আড়ষ্ট লাগছিলো আমার। বিষয়গুলো ব্যক্তিগতভাবে আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমার হঠাৎ মনে হলো এই যে এতো বড় একজন মানুষ, অথচ এতো সাধারণ, এতো অকপট, হয়তো এটাই ম্যাজিক। সামনে হয়তো তার সেই সাধারণ অবয়বে অসাধারণ হয়ে উঠার আরও অনেক অনেক গল্প শোনার সুযোগ হবে। কিন্তু তার আগে আজ তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার খবর শুনে থমকে গেছি।
আবরারের মৃত্যুর ঘটনা তার পরিবারের জন্য অচিন্তনীয় শোকের, অপূরণীয় ক্ষতির। এই শোক অসহনীয় যন্ত্রণার। যে দুর্ঘটনার কারণে আবরারের এই অকাল প্রয়াণ, সেই দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তও অপরিহার্য। ঘটনাটি শোনার পর প্রচ- মানসিক যন্ত্রণা অনুভব করেছি। যতোবারই ওই বয়সের একটি শিশুর মৃতমুখ চোখে ভেসেছে, তার বাবা-মায়ের কথা ভেবেছি, স্বজনদের কথা ভেবেছি, ততোবারই তীব্র যন্ত্রণায় আচ্ছন্ন হয়েছি। কিন্তু সেইদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকা সত্ত্বেও দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিকের সম্পাদকের বিরুদ্ধে সেই ঘটনায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার ঘটনা শুনে বিস্মিত হয়েছি, ব্যথিত হয়েছি। আশা করছি, বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত হবে। অকারণে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাউকে হয়রানি করা হবে না। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :