সুজন কৈরী : গাজীপুরের শরিফপুরে অপহরণের ১০ ঘণ্টা পর ১৬ মাস বয়সী শিশু শাহরিয়া ইসলাম আরাফকে উদ্ধার করেছে র্যাব-১। সেইসঙ্গে আটক করা হয়েছে নারীসহ অপহরণকারী চক্রের ৪ সদস্যকে। আটকৃতরা হলো- মোসা. জেরিন ইশরাত জুলি (২২), তার বোন তারিন নুশরাত তুলি (১৬), মো. আমিনুল ইসলাম (২৯) ও মো. সুমন (৩০)। তারা সবাই পেশায় গার্মেন্টস কর্মী।
র্যাব জানায়, বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে কৌশলে ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত খাবার খাইয়ে ওই শিশুকে অপহরণ করে ২০ লাখ টাকা দাবি করে আটককৃতরা। টাকা না পেলে শিশুর কিডনি বিক্রির পর হত্যার হুমকি দেয় তারা।
রোববার রাজধানীর উত্তরায় র্যাব-১ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটালিয়নের লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ১৬ জানুয়ারি গাজীপুরের শরিফপুরের আশরাফ আলীর বাসা ভাড়া নিতে যান জুলি। বাসা পছন্দ হয়েছে জানিয়ে দুইদিন পর শনিবার সকালে জুলি তার ছোট বোন তারিনকে নিয়ে অগ্রিম ভাড়া দেয়ার জন্য যান। এ সময় আলাপচারিতার ফাঁকে কৌশলে আশরাফসহ পরিবারে সবাইকে ঘুমের ওষুধ মেশানো জুস খাইয়ে দেন। সবাই অজ্ঞান হয়ে পড়লে দুই বোন আশরাফের শিশু সন্তানকে অপহরণ করে এবং বাসার নগদ টাকা, স্বর্ণলংকার ও মোবাইল ফোন চুরি করে পালিয়ে যায়। পরে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশিরা তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শনিবার বিকেলে সুস্থ হওয়ার পর গৃহকর্তা আশরাফ জানতে পারেন তার শিশু সন্তান আরাফ নিখোঁজ। পরে অপহরণকারীরা শিশুর মায়ের মোবাইল ফোনে পরিবারের কাছে অপহরণের কথা জানিয়ে মুক্তিপণ বাবদ ২০ লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় শিশুর কিডনি বিক্রি করার পর হত্যার হুমকি দেয়। এরপর শিশুটির পরিবার র্যাব-১ কার্যালয়ে অভিযোগ দেয়। এই প্রেক্ষিতে প্রথমে গাজীপুরের গাছা এলাকায় বিকাশে টাকা লেনদেনের সময় অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্য জুলি ও তারিনকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যে সাইনবোর্ড এলাকার একটি বাসা থেকে অপহৃত শিশুকে উদ্ধারসহ অপহরণকারী চক্রের অপর দুই সদস্য আমিনুল ও সুমনকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাতে র্যাব কর্মকর্তা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অপহরণ, চুরি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তারা সবাই পেশায় গার্মেন্টস কর্মী। তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল গাজীপুর শহরে একটি ফ্ল্যাট কিনে সুন্দরভাবে জীবন-যাপন করার। আর এই স্বপ্ন পূরণের জন্যই তারা এই অপহরণ করেছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :