নিউজ ডেস্ক : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও দেখে ৪৮ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বাবাকে খুঁজে পেলেন সন্তানেরা। ঘটনাটি ঘটেছে সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) হাবিবুর রহমানের (৭৮) সন্তানরা হাসপাতালে গিয়ে তাকে শনাক্ত করেন। আরটিভি
হাবিবুর রহমানের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায়। ১৯৭২ সালে ব্যবাসার উদ্দেশে বাড়ি থেকে চট্রগ্রামের উদ্দেশে বের হন। কিন্তু এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। হারিয়ে যাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন মাজারে ঘুমাতেন।
তিনি মৌলভীবাজারের হজরত শাহাব উদ্দিনের মাজারে থাকা শুরু করেন। মাজারে পরিচয় হয় মৌলভীবাজারের রায় শ্রী এলাকার রাজিয়া বেগমের সাথে। রাজিয়া বেগম মাজার খুব পছন্দ করতেন। সেই থেকেই তিনি হাবিবুর রহমানের দেখাশুনা শুরু করেন।
একমাস আগে তিনি নিজের খাট থেকে পড়ে যান। এতে তার ডান হাত ভেঙ্গে যায়। রাজিয়া বেগম মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। গত ৬/৭দিন আগে হাবিবুর রহমানের ভাঙ্গা হাতে ইনফেকশন দেখা দিলে চিকিৎসকরা তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পরে ওসমানী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই দিন আগে ভাঙ্গা হাতে অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নিলেও প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করতে না পারায় তার অপারেশন হয়নি।
এই বিষয়টি হাবিবুর রহমান পাশের বেডের একজনের সঙ্গে শেয়ার করেন। ঐ ব্যক্তি হাবিবুর রহমানের সামগ্রিক বিষয় জানিয়ে ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে সাহায্যর জন্য আবেদন করেন। এ ভিডিও দেখেন আমেরিকা প্রবাসী হাবিবুর রহমানের বড় ছেলের বউ। এরপর তিনি পরিবারের দস্যদের দেখালে পরিবারের সদস্য অনুমান করেন তিনিই হারিয়ে যাওয়া হাবিবুর রহমান।
পরে তার ছেলে ও পরিবারের সদস্যরা শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হন তিনিই হারিয়ে যাওয়া তাদের বাবা।
হাবিবুর রহমান নিজের স্ত্রী,ভাইদের নাম এবং নিজের গ্রামের নাম বলতে পেরেছিলেন। পরিবারের সদস্যরা তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বের করে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। বর্তমানে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
হাবিবুর রহমানের নাতী কেফায়েত বললেন, এতো বছর পর দাদাকে পেয়ে খুব খুশি। ছোট বেলা থেকে বাবা-চাচাদের কাছে দাদার গল্প শুনতাম। তখন মনে আশা রেখেছিলাম একদিন দাদাকে ফিরে পাবো। আল্লাহ সেই আশা পূরণ করেছেন। তাই দাদাকে ফিরে পেয়েছি। এজন্য তিনি রাজিয়া বেগম এবং ভিডিও আপলোডকারীকেও ধন্যবাদ জানান। অনুলিখন : জেবা আফরোজ
আপনার মতামত লিখুন :