শিরোনাম
◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয়

প্রকাশিত : ১৮ জানুয়ারী, ২০২০, ০৪:৪৮ সকাল
আপডেট : ১৮ জানুয়ারী, ২০২০, ০৪:৪৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন : ভোটের দিন পরিবর্তনে সব পক্ষই নমনীয়

নিউজ ডেস্ক : ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ভোটের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়ে রাজনৈতিক দল, প্রার্থীসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে নমনীয়তা দেখা গেছে। তবে বিষয়টি এখন সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন। কালেরকণ্ঠ

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজার দিন ভোটের তারিখ নির্ধারণ করার বিষয়ে নানা মহল থেকে আপত্তি উঠেছে। অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু), জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আগামী ২০ জানুয়ারি বিকেল ৪টা থেকে এক ঘণ্টা সারা দেশে মানববন্ধন ও ক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া ৩০ জানুয়ারি সারা দেশে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান ধর্মঘট, প্রতীকী অনশন ও অবরোধ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল শুক্রবার সংগঠনটি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ তুলে অবিলম্বে নির্বাচন কমিশন সচিবকে তাঁর পদ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে। আজ শনিবার সংগঠনের সংবাদ সম্মেলন রয়েছে।

গত ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। ৩০ জানুয়ারি ভোটের দিন নির্ধারণ করে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ভোটগ্রহণের আগের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে। প্রার্থীরা এখন প্রচার চালাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তাদের কেউ কেউ বলছেন, ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠানের কারণে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের নজির রয়েছে। জাতীয় সংসদের পঞ্চম সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ১৯৯১ সালের ২ মার্চ। কিন্তু ওই দিন শবেবরাত হওয়ার কারণে ভোটগ্রহণের তারিখ এগিয়ে এনে ২৭ ফেব্রুয়ারি নিধারণ করা হয়। অন্যান্য নির্বাচনের তফসিলেও কয়েকবার পরিবর্তন আনা হয়েছে মুসলিম ও অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উৎসবের কারণে। কিন্তু এবারের মতো বিতর্ক, আন্দোলন ও আদালতে রিট আবেদনের ঘটনা কখনো ঘটেনি।

গতকাল নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন শাখার একজন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। পরীক্ষার্থীদের আসন ঠিক করার জন্য এক দিন আগে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে নির্বাচনী সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়ে ফাঁকা করে দিতে হবে। এ অবস্থায় পরীক্ষা না পেছালে নির্বাচন ৩০ জানুয়ারির পর করার উপায় নেই। নির্বাচন ও অন্যান্য কারণে পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তনের নজির আছে। আবার ভোটগ্রহণের তারিখ এগিয়ে আনা যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে আপত্তি আসতে পারে।

এ বিষয়ে আন্ত শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বহু বছর ধরে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আমরা এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু করে আসছি। এটা রেওয়াজের মতো হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরাও ইতিমধ্যে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে নির্বাচন রাষ্ট্রের অগ্রাধিকারের বিষয়। এখন নির্বাচন কমিশন যদি এ বিষয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত জানায়, তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। তবে আনুষঙ্গিক কাজের জন্য পরীক্ষার এক দিন আগে থেকে আমাদের কেন্দ্র বুঝে পাওয়া প্রয়োজন।’

গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন হলে আপত্তি নেই আওয়ামী লীগের।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটিতে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম নির্বাচন পেছানোর দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন। একই দিন একই সিটিতে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেছেন, সরস্বতী পূজার দিন নির্বাচন হওয়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের মনের ক্ষোভ ভোটের বাক্সে প্রকাশ করবেন।

ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস একই দিন পূজা ও ভোট হওয়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানিয়েছেন। আর বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী ইশরাক হোসেনও সরস্বতী পূজার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ভোটের তারিখ পেছানোর জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেছেন।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ যা বলছে : সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সচিব একই দিনে ভোটকেন্দ্রের এক কক্ষে ভোটগ্রহণ আর অন্য কক্ষে পূজা অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন। আমরা তাঁর এই প্রস্তাবকে একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হিসেবে মনে করছি এবং এ প্রস্তাবকে ‘বাস্তবতাবিবর্জিত ও অবান্তর’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’ তিনি বলেন, নির্বাচনের অন্তত ২০ ঘণ্টা আগে যে ক্ষেত্রে স্কুল-কলেজসহ শিক্ষায়তনের ভোটকেন্দ্র আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে এবং নির্বাচনের দিন ১৪৪ ধারা জারি থাকবে, সে ক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্রের এক কক্ষের পাশে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠান ও উৎসব আয়োজনের প্রস্তাব নিঃসন্দেহে হাস্যকর।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘সরস্বতী পূজা উপলক্ষে নির্বাচনের তারিখ পুনর্নির্ধারণের দাবিতে ডাকসু ও সাধারণ ছাত্রসমাজের ন্যায়সংগত আন্দোলনের প্রতি আমাদের সংগঠনের আন্তরিক সমর্থন ও সংহতি রয়েছে। আমাদের সংগঠন মনে করে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় এ আন্দোলন একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।’

কাল আপিল বিভাগে শুনানি : সরস্বতী পূজার কারণে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভোটের তারিখ পরিবর্তন চেয়ে করা রিট আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি হতে পারে আগামী কাল রবিবার। রিট আবেদনকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট অশোক কুমার ঘোষ এমনটাই জানিয়েছেন। সরস্বতী পূজার কারণে নির্বাচন পেছানোর দাবিতে গত ৫ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। গত ১৪ জানুয়ারি তা খারিজ করে আদেশ দেন আদালত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়