মিনহাজুল আবেদীন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু দিন ধরে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তির ঘটনা ঘটছে। এর সাথে সিন্ডিকেটসহ অভিভাবক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এর পিছনে মদদ দিচ্ছে রাজনৈতিক দল। বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে তারা তাদের ক্ষমতার প্রভাব দেখায়।
এ বিষয়ে বিবিসি বাংলার এক সাক্ষাৎকারে সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, ডিজিটাল জালিয়াতি করে যে, সকল ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছিলো বা ভর্তি হতে সহায়তা করেছে, তাদের মধ্যে ৮৭ জনকে সনাক্ত করা হয়েছে। আমাদের নিয়ম কানুন মেনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের অর্ডার অনুযায়ী আমরা, বিভিন্ন পর্যায়ে এদের মধ্যে কিছু ছাত্রকে সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করি, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, প্রশ্ন উত্তরে যে প্রকৃত দোষী সে কোনও সঠিক জবাব দিতে পারেনা।
আমি মনে করি এর জন্য দায়ী তার পরিবার, কারণ বড় ধরণের অর্থের বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্তানকে পড়াতে চায় তার পরিবার, কেউ আশ্রয় নেয় কোনও সিন্ডিকেট বা রাজনৈতিক দলের। শিক্ষার্থীদেরকে আজীবন বহিষ্কারের মাধ্যমে সর্তক করে দেয়া হলো, যাতে ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করে এবং ভবিষতে এ ধরণের কাজ থেকে বিরত থাকে।
এদিকে শিক্ষা গবেষক অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এই কালো পথে দৌড় দিয়ে যদি ৫০ জন ভর্তি হয়। তাহলে এদের কারণেই ৫০জন মেধাবী ছাত্র বাদ পড়ে যায়। এই অবৈধ উপায়ে ভর্তি হয়ে সুফলতা পেয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নিলেও, তারা কর্মজীবনেও অবৈধ পথে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করবে। এভাবে যারা উচ্চতর ডিগ্রী নেয় বা নিবে, তাদের থেকে জাতি কিছু আসা করে না, বরং তারা সমাজের অপকার বা কলঙ্কই করবে।
তিনি মনে করেন, এমন জঘন্য জালিয়াতি কাজের সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে শাস্তি হওয়া উচিত।
যে সব শিক্ষার্থীদের আজীবন ভর্তি বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে, তারা ২০১২-২০১৩ এবং ২০১৮-২০১৯ শিক্ষা বর্ষের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি হয়েছিল। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা জালিয়াতি ছাড়াও বহিষ্কারের তালিকায় রয়েছে, ছিনতায়, অস্ত্র এবং মাদক দ্রব্যের সাথে জড়িতরা।