সানজীদা : মানব শরীরে হার্টে যেমন রক্তনালী থাকে তেমনি সারা শরীরে রক্তনালী থাকে। যদি হার্টের রক্তনালীতে ব্লক হয় তাহলে বলা হয় হার্ট অ্যাটাক। আর ব্রেইনের রক্তনালীতে ব্লক হয় তাহলে বলা হয় ষ্ট্রোক।
আর এ ব্লক যেকোনো জায়গায় হতে পারে। যেমন হাত ও পায়ের রক্তনালীতে ও হতে পারে। হাত ও পায়ের ব্লক দুইভাবে হতে পারে যেমন, হার্টের রক্তনালীগুলোতে হার্টের ভিতর রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। আর এ রক্ত জমাট বাঁধা যদি হাত বা পায়ের ভিতরে চলে যায় তখন হঠ্যাৎ করে রক্তনালী বন্ধ হতে পারে। এছাড়া অনেকের গলার ভিতর একটি অতিরিক্ত হাড় থাকে যা রক্তনালীতে চাপ দিতে পারে। তখন হাতের ভিতর রক্তনালীগুলোকে ব্লক করে দিতে পারে। সময়টিভি
হাত ও পায়ের রক্তনালীতে ব্লক হঠাৎ হতে পারে আবার ধীরে ধীরেও হয়। হঠাৎ হলে আমরা তাকে বলি হ্যান্ড অ্যাটাক বা লেগ অ্যাটাক।
হঠাৎ করে হাত বা পায়ে তীব্র ব্যথা হচ্ছে, আর এতোটাই ব্যথা যে ওষুধে কমছে না। আর যদি পরীক্ষা করে দেখা যায় পায়ে পালস নেই। আস্তে আস্তে হাত বা পা কালো হয়ে যাচ্ছে। এক সময় ব্যথা চলে যাচ্ছে কিন্তু হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। আর যখন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় তখন চিকিৎসক বলছে হাত পা প্যারালাইসিস হয়ে গেছে। এটি কেটে ফেলতে হবে। যদি হঠাৎ করে কারোর হাত বা পায়ের রক্তনালী ব্লক হয়ে যায় তখন মাএ ৬-৮ ঘন্টা সময় থাকে হাত পা-টি ভালো করার।
উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রক্তে অতিমাত্রায় চর্বি ইত্যাদি কারনে পায়ে দীর্ঘস্থায়ী ব্লক হতে পারে। এক্ষেত্রে হাঁটতে গেলে পায়ে খিল ধরে এবং ব্যথা হয়, বিশ্রাম নিলে কিছুটা কমে। রক্ত চলাচল কম থাকলে সামান্য আঘাতে পায়ে ঘা কিংবা গ্যাগ্রিন হয় এবং সহজে তা সারতে চায় না।
হার্টের মতো পায়ের ও এনজিওগ্রাম করা যায়। ডুপ্লেক্স পরীক্ষায় পায়ে ব্লক ধরা পড়লে এনজিওগ্রাম করে রক্তনালীর ব্লকের অবস্থান নিশ্চিত করা যায়। এনজিওপ্লাষ্টির মাধ্যমে রক্তনালীর ব্লক অপসারন করা হয়। যখন এনজিওগ্রাম করা হয়, তখনই সরু বা বন্ধ রক্তনালী প্রথমে বেলুন দিয়ে মোটা করে ওই স্থানে একটি রিং, আংটি বা ষ্টেন্ট বসিয়ে দেয়া হয়। ফলে রিংয়ের মধ্যে দিয়ে রক্ত চলাচল করতে পারে।
হার্টের ব্লক দূর করার মতোই পায়ে রিং পরানো যায়। আবার বাইপাস সার্জারি করানো যায়, প্রয়োজনে আক্রান্ত স্থান পরিস্কার করে দেয়া যায়। ইনজেকশন প্রয়োগের ও সুযোগ রয়েছে। তবে পায়ে ব্লক মানেই বার্জাজ ডিজিজ নয়। কেউ কেউ আবার পায়ের রক্তনালীর সমস্যা জনিত ব্যথায় অহেতুক ব্যথানাশক ওষুধ খান, এক্সরে কিংবা এমআরআই’র মতো ব্যয়বহুল পরীক্ষা করিয়ে সময় নষ্ট করেন।এতে অকালে অঙ্গহানীর আশংকা থাকে।
পায়ে হাত দিয়ে পালস বা নাড়ি না পেলে কিংবা স্পদন ক্ষীণ অনুভব করলেই বোঝা যায়, রোগীর রক্ত নালীতে কোনো না কোনো সমস্যা আছে। সে ক্ষেএে সঠিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের ভাসকুলার সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা.সাকলায়েন রাসেল।
আপনার মতামত লিখুন :