শিরোনাম
◈ হায়দার আকবর খান রনো মারা গেছেন ◈ ডোনাল্ড লু’র ছয়দিনের সফর শুরু, ভারত ও শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশ আসছেন ১৪ মে ◈ লোহাগড়ায় দুর্বৃত্তের গুলিতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু ◈ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব পাস  ◈ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টানা চার জয় বাংলাদেশের ◈ বন্দি ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি বাহিনীর অমানবিক নির্যাতনের তথ্য-ছবি ফাঁস ◈ গাজার রাফাহজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা ও বোমাবর্ষণ ◈ কোনো ভর্তুকি ছাড়াই নিজস্ব আয় থেকে উড়োজাহাজের মূল্য পরিশোধ করছে বিমান ◈ আওয়ামী লীগ মাঠে না থাকলে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে: ওবায়দুল কাদের ◈ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা শেষ, এখন চলবে ফাইজার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১২ জানুয়ারী, ২০২০, ০২:১২ রাত
আপডেট : ১২ জানুয়ারী, ২০২০, ০২:১২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘রূপাঞ্জনাকে নিয়ে কথা বলার প্রবৃত্তি নেই’, জানালেন অরিন্দম শীল

রাশিদ রিয়াজ : প্রথম এপিসোডের চিত্রনাট্য পড়ার সময়েই নাকি তাঁর সঙ্গে অসংযত আচরণ করেন অরিন্দম। তারপরেও ধারাবাহিকে কাজ করেছেন তিনি। ভারতের এই পরিচালকের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র। অভিনেত্রীর দাবি, 'ভূমিকন্যা' ধারাবাহিকে কাজের অফার দিয়েছিলেন পরিচালক। প্রথম এপিসোডের চিত্রনাট্য পড়ার সময়েই নাকি তাঁর সঙ্গে অসংযত আচরণ করেন অরিন্দম। তারপরেও ধারাবাহিকে কাজ করেছেন তিনি। এবং এক বছর পরে তিনি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন পরিচালকের দিকে। ঘটনা সত্যি? কী বলছেন অরিন্দম?

মুঠোফোনে ধরতেই হালছাড়া গলা পরিচালকের। প্রথমেই পাল্টা প্রশ্ন করলেন, 'এসব কী? একবছর পরে এসব কী বলছেন রূপাঞ্জনা? ওঁর সঙ্গে যথেষ্ট সুস্থ পেশাগত সম্পর্ক ছিল। চিত্রনাট্য নিয়ে আলোচনার পরের দিনই রূপাঞ্জনা জানান, উনি খুশি আমার সঙ্গে কাজ করতে পেরে। সেকথা রূপাঞ্জনা নিজে হোয়াটস অ্যাপ করে জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ওয়ার্কশপ করে কাজে নামবেন। আগের দিনেই যদি উনি আমার কাছে অপমানিত হন তাহলে পরের দিন আমাকে এরকম হোয়াটস অ্যাপ পাঠালেন কেন! আমারও তো মেয়ে, বউ রয়েছেন। সমাজে সম্মান রয়েছে!' দেখুন হোয়াটস অ্যাপের সেই
রূপাঞ্জনাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। কিন্তু সূত্রের খবর, চুক্তিবদ্ধ থাকায় চ্যানেলের সম্মান বাঁচাতেই তিনি মুখ বন্ধ রেখেছিলেন। এই কথার প্রত্যুত্তরে অরিন্দমের জবাব, ''তাই যদি হবে তাহলে মুখ খুলতে এক বছর লেগে গেল! রূপাঞ্জনার সঙ্গে এর পরেও অনেকবার কথা হয়েছে। আমার ছবিতে কাজ দেবার অনুরোধ জানিয়েছেন। আমিও বলেছি, তুমি ভালো অভিনেত্রী। তোমায় নিশ্চয়ই কাজ দেব। আমার 'সত্যমেব জয়তে' দেখে প্রশংসা করেছেন। 'মিতিন মাসি' দেখতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। সেই নিয়েও কথা হয়েছে হোয়াটস অ্যাপে। তারপর কোনও যোগাযোগ ছিল না।'' দেখুন সেই হোয়াটস অ্যাপ।

একই সঙ্গে তিনি এও বলেন, 'আমি কোনোদিন ফাঁকা অফিসে কাউকে ডাকি না। সব সময়েই লোক থাকে সেখানে। সেদিনও অ্যাকাউন্টসের লোক ছিল। তাছাড়া আমার স্ত্রীও ছিলেন। এভাবে যা খুশি একটা মানুষ সম্বব্ধে বলা যায়! রূপাঞ্জনাকে নিয়ে কথা বলার প্রবৃত্তি আমার আর নেই।' ঘটনার সত্যাসত্য অবশ্যই সময় বলবে। তবে রূপাঞ্জনা-অরিন্দমের এই বাকযুদ্ধ একটাই প্রশ্ন জাগাচ্ছে, পাশ্চাত্যের #মিটু আন্দোলন কি আরব সাগরের ঢেউয়ে ভিজে এবার আছড়ে পড়তে চলেছে গঙ্গাপাড়ে?

এদিকে টালিউড অভিনেত্রী রুপাঞ্জনা বলছেন, ইস্টার্ন বাইপাসের কাছে অফিসে স্ক্রিপ্ট পড়ে শোনানোর অছিলায় তাঁর মাথায়-পিঠে হাত বুলিয়েছিলেন অরিন্দম। ঘনিষ্ঠ আলিঙ্গনের মাধ্যমে তাঁকে কদর্য ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেছেন রূপাঞ্জনা৷।  ‘ভূমিকন্যা’ সিরিয়ালের প্রথম এপিসোডের স্ক্রিপ্ট পড়ে শোনার জন্য আমায় ওঁর অফিসে ডাকা হয়েছিল। মনে আছে, তখন পুজো আসছে আসছে এমন একটা সময়। সম্ভবত তৃতীয়া। বিকেল পাঁচটার সময় আমায় পৌঁছতে বলা হয়েছিল। সেই মতো অরিন্দমের অফিসে যেতেই দেখি অফিস ফাঁকা, শুধু প্রোডাকশনের ছেলে ছিল। ঢুকতেই তিনি জিজ্ঞসা করেন, চা খাবি? চায়ের লোকটি চা দিয়ে যাওয়ার পরেই সেখান থেকে কায়দা করে তাঁকে সরে যেতে বলেন উনি। তখন অফিসে শুধু আমরা দু’জন। আমার ভীষণ আনক্যানি ফিল হচ্ছিল। হঠাৎই নিজের জায়গা থেকে উঠে এসে ঘরেই একটা কাউচে এসে বসলেন। বলে বোঝাতে পারব না। ওঁর বসা, কথা বলা…ভীষণ ইঙ্গিতপূর্ণ। হাত বাড়িয়ে আমাকে ডাকছে।”

তিনি আরও বলেন, “যখন সেই ব্যক্তি কাউচে বসতে গেলেন, যাওয়ার আগে আমার মাথায় হাত বুলোচ্ছেন…কখনও পিঠে। আমি ভগবানকে ডাকছি তখন। আরে বাবা, আমি তো নতুন মেয়ে নই। এতদিন ধরে কাজ করছি। সাইবাবাকে ডেকে চলেছি, কেউ একজন যেন চলে আসে। কিন্তু কেউ তো নেই। মনে হচ্ছিল এই বার বুঝি আমি রেপড হয়ে যাব। কেউ হাত-ফাত বুলিয়ে চলে যাচ্ছে…এরপর যে তিনি কী করতে পারেন সেটা হয়তো একজন মহিলার পক্ষে আন্দাজ করা খুব সহজ। আমি আর থাকতে না পেরে ওঁকে বেশ স্পষ্ট করে গোটা গোটা ভাষায় বলি, ‘‘অরিন্দমদা, প্লিজ টেল মি অ্যাবাউট দ্য স্ক্রিপ্ট। উনি বোধহয় তখন বুঝতে পারলেন, যে সব মহিলার সঙ্গে উনি সচরাচর এই ধরনের ট্রিক খেলে থাকেন আমি তাঁদের মধ্যে পড়ি না।”

রূপাঞ্জনার কথা অনুযায়ী, “এরপর আচমকাই ‘ডিরেক্টর মোডে’ চলে যান অরিন্দম। স্ক্রিপ্ট বোঝাতে শুরু করেন। এরপর পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমি জানিনা কী ভাবে, কোথা থেকে ওঁর স্ত্রী সেখানে উপস্থিত হন। আমাকে দেখে তিনিও অপ্রস্তুত। তিনি বোধহয় জানতেন না,তাঁর স্বামী সেই সময় আমাকে ওঁর অফিসে ডেকেছেন। আমাদের তিনজনের মধ্যে তখন অদ্ভুত নিস্তব্ধতা। সেকেন্ডের মধ্যে বউভক্ত হয়ে গেলেন তিনি। যে মানুষটা কিছু ক্ষণ আগে আমায় নোংরা ইঙ্গিত করছিলেন তিনি হঠাৎ করে কী ভাবে স্ত্রীকে দেখে একদম পাল্টি খেয়ে গেলেন আমি বুঝতেই পারছিলামনা। এরপর আমাকে তিনি ড্রপও করে দেন। ওঁর কোনও একটা প্রিমিয়ারে যাওয়া ছিল। যদিও সেটার কোনও প্রয়োজন ছিল না।”

এনিয়ে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলেও লিখেছেন রূপাঞ্জনা। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, “এটা কোনও খবর নয়, এটি অভিনেত্রী জীবনের আক্ষেপ যে এমন একটি ঘটনা আমার সঙ্গে ঘটেছিল। খারাপ লাগছে এটা ভেবে বহু কষ্টে নিজের একটা জায়গা তৈরি করেছি এই ইন্ডাস্ট্রিতে, সেই জায়গাটাই কিছু মানুষ ক্ষুদ্র করে দিতে চেয়েছিল।

কিন্তু এত দিন চুপ ছিলেন কেন? রূপাঞ্জনা জানান, যে চ্যানেলে ‘ভূমিকন্যা’ সম্প্রচারিত হত সেই চ্যানেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন তিনি। যাতে চ্যানেলের ইমেজের কোনও ক্ষতি না হয় সে জন্যই এত দিন চুপ ছিলেন। তাঁর কথায়: “আর চুপ করে থাকতে পারলাম না। ইন্ডাস্ট্রিতে রোজ নতুন নতুন মেয়েরা আসেন। তাঁরা যাতে ভবিষ্যতে ওই লোকটির থেকে সাবধান হয়ে যান সে জন্যই মুখ খুলেছি। অরিন্দম শীল একটি অত্যন্ত বদমাশ, বদ লোক। ওঁর মুখোশ খোলার সময় এসে গিয়েছে। তিনি আগেও আর এক অভিনেত্রীর সঙ্গে এমনটা করেছেন।”

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়