এম. এ. কুদ্দুস, বিরল প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বিরল উপজেলার জেলা শহর লাগোয়া বিজোড়া ইউপি’র দক্ষিণ বহলা গ্রাম। ১৯৭১ সালের আজকের ৩৯ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়। দিনটি এখনোও বহলাসহ আশ-পাশের গ্রামের লোকজনদের শরীর শিউরে উঠে।
৭১-এর ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যার সময় পুরো পাড়াটাই ঘিরে ফেলে পাকহানাদার বাহিনীর সদস্য ও তাদের দোসররা। তারা প্রস্তাব দেয় সে গ্রামে খাঁনদের ক্যাম্প স্থাপন করার। এ সময় গ্রামের সাধারণ মানুষেরা আপত্তি তুললে মুহুর্তে যা ঘটার তা ঘটে যায়। মাগরিবের নামাজের মাত্র দু’ রাকাত নামাজ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে পাক হানাদার বাহীনি এবং তাদের দোসররা সাধারণ মানুষকে সারিবদ্ধ করে ব্রাশ ফায়ার করে। এতে ৩৯ জন নীরিহ মানুষের জীবন প্রদীপ চিরতরে নিভে যায়। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নাম ধরে ডাকতে ডাকতে ছটফট করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে তারা।
পাকসেনা ও তাদের দোসাররা রক্তে রক্তাক্ত লাশ গুলির স্তুপ করে দিয়ে চলে যায়। টানা ৩ দিন পর অর্থাৎ ১৬ ডিসেম্বর বিকালে পঁচন ধরা লাশ গুলিকে পাশে একটি গর্তকরে এক সাথে ৩৩ জনকে সমাহিত করা হয়। তাঁরা হলেন, সাহের উদ্দিন, খমির উদ্দিন, ওহাব আলী, মছলে উদ্দিন, সফিউদ্দিন, আব্দুস সাত্তার, আব্দুর রহমান, ভুতা মোহাম্মদ, কালু মোহাম্মদ, জাহের উদ্দিন, আখি মোহাম্মদ, টাকরু, তসির উদ্দিন, নুরু মোহাম্মদ, সামির উদ্দিন,আব্দুল লতিফ, ছপি উদ্দিন, রবিতুল্যাহ, আকবর আলী, আমিন আলী, মুন্সি আঃ জব্বার, ইসাহাক আলী, মহসীন আলী (চেন্দেরু), জয়নাল আবেদীন, বারেক তুল্যা, রহিম উদ্দিন, গোলাম মোস্তফা (গলো), আঃ করিম আলী, সোহরাব আলী, মোস্তাফা (মনু), ওমর আলী, মুজিতুল্যাহ, আছির উদ্দিন। বাকি ৬ জনঃ ফজলু, খেতু বোড়াল, খলিল উদ্দিন, জাহের মোহাম্মদ, রহিমুদ্দিন, আঃ মালেকের লাশ পারিবারিকভাবে দাফন করা হয় গ্রামের অন্য জায়গায়।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময় গত ২০১২ সালে শহীদদের উদ্দেশ্যে গণকবর এলাকায় একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরী করা হলেও শহীদদের বা শহীদ পরিবার গুলির সরকারিভাবে এখনোও তেমন স্বীকৃতি মিলেনি। সম্পাদনা : মৌরী সিদ্দিকা