মহসীন কবির : সোমবার দুপুরে রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বারডেম হাসপাতালের পরিচালক অব. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুল হক মল্লিক এ খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। ৮৫ বছর বয়সী এই অধ্যাপক প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। সময় টিভি
অজয় রায়ের পুত্রবধূ কেয়া বর্মন মঙ্গলবার রাতে বলেছেন, “উনি এখনও লাইফ সাপোর্টেই আছেন। উন্নতির কোনো সম্ভাবনা দেখাতে পারছেন না চিকিৎসকেরা।” চার বছর আগে জঙ্গিদের হাতে প্রাণ হারানো বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অভিজিৎ রায়ের বাবা অজয় রায় গত ২৮ অক্টোবর আদালতে গিয়ে ছেলে হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন।
চিকিৎসক ও পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ২৫ নভেম্বর বারডেম হাসপাতালে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের সাবেক অধ্যাপক অজয় রায়। ধীরে ধীরে শ্বাসকষ্ট বাড়লে দুইদিন পর তাকে কৃত্রিম শ্বাস দেওয়া শুরু হয়। শিক্ষা আন্দোলন মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অজয় রায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতাদেরও একজন। বর্তমানে তিনি নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা।
একুশে পদকপ্রাপ্ত পদার্থবিদ অজয় রায়ের দুটি গবেষণা নোবেল কমিটিতে আলোচিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অবসরে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ইউজিসি অধ্যাপকও ছিলেন অজয় রায়। মুক্তিযোদ্ধা অজয় রায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল ভাষা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানেও।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি একুশের বইমেলা থেকে বেরিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন অজয় রায়ের বড় ছেলে প্রবাসী লেখক অভিজিৎ রায়। সেদিন উগ্রবাদীদের হামলার শিকার হয়ে হাতের আঙুল হারান অভিজিতের স্ত্রী ব্লগার রাফিদা আহমেদ বন্যাও।
অজয় রায়ের অসুস্থতার খবর ফেইসবুকে শেয়ার করে সম্প্রতি বন্যা লিখেছেন, “কী পূর্ণ এবং স্বার্থক একটা জীবনই না কাটিয়েছেন বাবা। কিন্তু তার পরক্ষণেই মনে হলো গত পাঁচ বছরে যে কষ্ট পেয়েছেন, সেটাও তো বলার মতো না। ”সেই ২০১৫ থেকেই উনি যে ভেঙে পড়তে শুরু করেছেন, সেটা আর ঠিক হয়নি। এই বছরের শুরুতে অভির মা মারা যাওয়ার পর সেই ভেঙে পড়াটা শুধু তরান্বিতই হয়েছে।”
আপনার মতামত লিখুন :