ফারুক ওয়াসিফ : ২০ বছর আগে ঢাকার রিকশাচালক আর তরুণ কবিদের প্রায় সবাই ছিলো বিষন্ন। সেসময় ঢাকার সব রাস্তায় রিকশা চলতো আর ফাঁকাও ছিলো। দেখতাম মাঝরাতে বিষম্ন রিকশাঅলা প্যাডল ঠেলছে আর পেছনে ততোধিক বিষন্ন কবি ‘ও রে নীল দরিয়া’ বা ‘এই নীল মণিহার’ গাইতে গাইতে যাচ্ছে। সেই বিষন্নতার মধ্যে তাও মায়া ছিলো, সৌন্দর্য ছিলো।
তারপর পোশাককর্মীরা এলো আর বিষন্ন হয়ে গেলো। বিষন্ন দাসের দলের সেই চলার মধ্যে কোনো সৌন্দর্য ছিলো না, ছিলো মানবিকতার ব্যারোমিটারের তলার নিচের জীবন। যে ছাত্র ও বেকাররা বাইরে থেকে এসে মেসবাড়িতে থাকতো, ঢাকারবিষণ্ণ উদর তাদেরও গিলে খেল। মুরগির খাঁচার মতো বাসের পেটে আটকে থাকা নিম্ন ও মাঝারি শ্রেণির লোকেরা বোঝার আগেই হয়ে পড়লো বিষণ্ণ। এরপর এলো উন্নয়নের রাজনীতি। বাকি যা করার সেই রাজনীতিই করে দিলো। আমার কথা বাদ। আমি আশৈশব বিষন্ন। আমার জামা টানাটানি করে লাভ নেই। একাত্তর ভাগবিষণ্ণদের শহরে যে ২৯ ভাগ প্রসন্ন তাদের কথা ভাবছি। তাদের জামা খুলে নিয়ে পরতে পারলেও তো কিছু মানুষের দুঃখ কমতো। তারা তা করে না ক্যারে!