বাসস : ইতোমধ্যে এই জেলায় শতকরা ৪৫ ভাগ ধান কাটা ও মাড়াই সম্পন্ন হয়েছে।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, ৫ উপজেলার সর্বত্র এখন কৃষকরা আমন ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষক ও মজুরদের হাতে জমিতে আমন ধান লাগানোর পরে তেমন কাজ থাকতো না। ফলে আশ্বিন-কার্তিক মাস কাজের অভাবে মঙ্গা দেখা দেয় এখানকার মানুষের নিকট। দৈনন্দিন খরচ চালাতে চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে হতো। এমন পরস্থিতিতে উদ্ভাবন করা হয় ব্রি ধান-৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৯, ৪৯, ৫১, ৫২, ৫৬, ৬২, ৮৭ হাইব্রিড ধানীগোল্ড,স্বর্ণ-৫ বিনা-৭, জিরা শাইল, গুটিস্বর্ণা ও কাটারী ভোগ জাতের আমন ধান।
এছাড়াও পটল পাইরী, চয়ন জাতের ধান স্বল্প সময়ে (৯০ দিন) অল্প খরচে কৃষকের ঘরে উঠতে শুরু করে। ব্রি ধান-৩২, ৩৩, ৩৯, ৪৯, ৫১, ৫২, ৫৬, ৬২, ৮৭ হাইব্রিড ধানীগোল্ড,স্বর্ণ-৫ ও বিনা-৭ জাতের আমন ধান আগাম জাত হওয়ায় স্বল্প সময়ে এ ধান কৃষকরা ঘরে তুলতে পারছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আরো জানায়, নিবিড় বার্ষিক ফসল উৎপাদন কর্মসূচীর আওতায় ২০১৯-২০২০ রোপা আমন চাষ মৌসুমে ৭৩ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এরমধ্যে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ৬৭ হাজার ৪৮০ হেক্টর, হাইব্রিড জাতের ৫ হাজার ১০০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের রয়েছে ৫৮০ হেক্টর। এতে চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৯ মেট্রিক টন। হেক্টর প্রতি গড় ফলন ধরা হয়েছে ২ দশমিক ৮৭ মেট্রিক টন চাল। জয়পুরহাটের ৫ উপজেলায় রোপা আমন চাষ সফল করতে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি বিএডিসি (বীজ) থেকে উন্নত মানের ধানবীজ সরবরাহ করছে কৃষকদের মাঝে। আলু চাষের জন্য এ জেলার কৃষকরা বেশিরভাগ জমিতে আগাম জাতের ধান চাষ করে থাকেন।
কালাই উপজেলার সরাইল গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম এ জানান, ৯ বিঘা জমিতে আগাম জাতের বিনা-৭ ধান চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। একই গ্রামের কৃষক আতিকুল ইসলাম ৬ বিঘা জমিতে আগাম জাতের ধান চাষ করে বিঘা প্রতি ১৭/১৮ মণ ধান পেয়েছেন। নতুন ধান বাজারে আমদানি শুরু হয়েছে। বর্তমানে ৬শ থেকে সাড়ে ৬শ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে । ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত জেলায় শতকরা ৪৫ ভাগ ধান কাটা মাড়াই সম্পন্ন হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুধেন্দ্র নাথ রায় জানান, এবার রোপা আমন চাষে জেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগ ও রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি অফিস নিবিড়ভাবে মনিটরিং করেছে। বীজ ও সারের কোন সঙ্কট ছিলো না। তবে রোপা আমনের চারা লাগানোর সময় বৃষ্টিপাত কম থাকায় গভীর ও অগভীর নলকূপের সাহায্যে সেচ দিতে হয়। এতে ফলনের কোন সমস্যা হয়নি।
এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগ জানায়, ২০১৮-১৯ রোপা আমন চাষ মৌসুমে জেলায় ৭২ হাজার ৯শ ৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছিলো। এতে চাল উৎপাদন হয়েছিলো ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন। এতে জেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে তা অন্যত্র সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছিলো। অনুলিখন : ম. সিদ্দিকা, সম্পাদনা : মাজহারুল ইসলাম
আপনার মতামত লিখুন :