শিমুল মাহমুদ : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে এই কালো মিছিল বের করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মিছিলটি বিশ্বাবিদ্যালয়ের রাজু ভার্স্কযের সামনে থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্ত্বর ঘুরে বুয়েট, বুয়েট থেকে চাঁনখারপুল হয়ে শাহবাগ ঘুরে আবারো টিএসসি রাজু ভার্স্কযের সামনে এসে শেষ হয়।
মিছিলের নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ( ডাকসু) 'র ভিপি নুরুল হক নুর।
মিছিলে কালো পতাকা হাতে শিক্ষার্থীরা 'ইউ ওয়ান্ট জাস্টিস', 'শিক্ষা সন্ত্রাস একসাথে চলে না', 'ছাত্রলীগের গুন্ডারা হুশিয়ার সাবধান','ভারতের দালালেরা হুশিয়ার সাবধান ' 'আমার ভাই মরলো কেনো, প্রশাসন জবাব চাই' শ্লোগান দিতে দেখা যায়।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত নুরুল হক নুর বলেন, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের একজন ছাত্রের মৃত্যুর দাবিতে সারাদেশের ছাত্ররা ন্যায়বিচারের আন্দোলন করছে। সেই আন্দোলনেও হায়েনারা হামলা চালাচ্ছে। আজকে আমরা যদি থেমে যাই তাহলে তনু এবং নুসরাত হত্যার বিচারের মতো ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হবে।
প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আবরার সহ যে সকল হত্যাকাণ্ড হয়েছে, প্রত্যাকটি হত্যাকাণ্ডের জন্য বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার নিষ্পত্তি করতে হবে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্ররা আবরার হত্যার প্রতিবাদে মিছিল করে সেখানে ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা চালিয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আবরার হত্যার প্রতিবাদকারীরা হুমকি দেওয়া হয়েছে। আজকের আমরা মিছিল করছি আমাদের ওপরও বিভিন্ন হুমকিধামকি আসছে। আমাদের বলা হচ্ছে,আমরা যেনো মিছিল না করি, ভারতের সাথে যে চুক্তি হয়েছে এর প্রতিবাদ না করি।
ছাত্রসমাজকে উদ্দেশ্য করে নুরুল হক নুর বলেন, আজকের দু'দিন মিছিল করলাম পত্রিকার পাতায় হেডলাইন হলো, মিডিয়া গরম হলো, টকশো হলো, কিন্তু কিছুদিন পরেই থেমে যাবে।তাই আজকে আপনারা যদি এ দেশের ভালো চান। দেশে ভিন্ন মতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চান, গণতন্ত্র চান, ছাত্রদের জাগতে হবে। অন্যায়, অবিচারের প্রতিবাদ করতে হবে। আমরা আমাদের জীবন দিয়ে হলেও এর অগ্রভাগে থাকবো। কোন হুমকি-ধামকির ভয়ে আমরা চুপসে যাবো না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলে বঙ্গোপসাগরের রাডার বসানোর অনুমতি দিয়েছে এই নতজানু সরকার।কয়েক বছর ধরে ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তি এ সরকার করতে পারেনি অথচ তারা ফেনী অঞ্চলের কৃষিককে ঝুঁকির মুখে ফেলে নদীর পানি ভারতকে দেওয়ার চুক্তি করেছে। কারণ না হলে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এভাবে দেশের দেশের স্বার্থকে বিকিয়ে দিয়ে চুক্তি করে যাচ্ছে। আজকে এই বিষয় গুলো নিয়ে দেশের ছাত্রসমাজকে ভাবতে হবে। কারণ এরা এদেশের নাগরিক। এই দেশের ভালো, আপনার ভালো। এই দেশের যদি মন্দ থাকলে আপনিও এই মন্দ থেকে রেহাই পাবেন না।
তিনি আরো বলেন, দেশের নিরাপত্তা নিয়ে যখন শঙ্কা দেখা দিয়েছে তখন এই রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি সরকার। কারণ, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়। তাই আজকে এই সরকারের বিরুদ্ধে যারা সমালোচনা করছে, কথা বলছে তাদেরকে পুলিশ দিয়ে ছাত্রলীগকে দিয়ে দমনের চেষ্টা চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :