আসিফুজ্জামান পৃথিল : ডাইনোসর প্রজাতিগুলো সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিলো পৃথিবীতে এক বিশাল গ্রহাণুর আঘাতের ফলে। একদল বিজ্ঞানী সেই ঘটনাটির বিশদ বিবরণ তৈরি করেছেন সেকেন্ড-মিনিট-ঘণ্টা ধরে ধরে। প্রায় ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে এই ঘটনা ঘটেছিলো। ডাইনোসরদের বিলুপ্তির পর পৃথিবীতে শুরু হয় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের যুগ। -বিবিসি
১২ কিলোমিটার চওড়া এই গ্রহাণুটি পড়েছিলো মেক্সিকো উপসাগর তীরবর্তী ইউকাটান উপদ্বীপ এলাকায়। সেই এলাকায় তৈরি হওয়া বিশাল জ্বালামুখের ভ‚প্রকৃতি এবং শিলার গঠন তন্ন তন্ন করে পরীক্ষা করে দেখেছেন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালর একটি গবেষক দল এবং সেই গ্রহাণুর আঘাতের চিহ্ন তারা খুঁজে পেয়েছেন। গবেষকরা বলছেন, এত জোরে এটি পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়েছিলো যে তাতে ২০০ কিলোমিটার চওড়া এবং কয়েক কিলোমিটার গভীর একটি গর্ত বা জ্বালামুখ তৈরি হয়েছিলো। গর্তটির কিনারগুলো তার পর ভেতর দিকে ধসে পড়ে। এর ফলে সাগরে সৃষ্টি হয়েছিল এক ভযাবহ সুনামি। তৈরি হয়েছিলো দানবাকৃতির ঢেউ। এই গর্তটির বড় অংশই এখন আছে সমুদ্রের তলায়, তার ওপর জমেছে ৬০০ মিটার পুরু পলির আস্তরণ। মাটির ওপর যে অংশ আছে তা চুনাপাথর দিয়ে ঢাকা। বিজ্ঞানীরা ওই এলাকাটির উপাদান পরীক্ষা করে কোন সালফার বা গন্ধকের উপস্থিতি পান নি, কিন্তু সমুদ্রের তলদেশের ওই জায়গাটির এক তৃতীয়াংশই ছিল জিপসামের তৈরি, যার অন্যতম উপাদান সালফার।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেই সালফার হয়তো ওই গ্রহাণুর আঘাতজনিত বিস্ফোরণে সাগরের পানির সঙ্গে মিশে গিয়েছিলো এবং তা আকাশে ছড়িয়ে পড়েছিলো। তার ফলে নাটকীয়ভাবে আবহাওয়া অত্যন্ত ঠান্ডা হয়ে যায়, এবং কোন প্রাণী বা গাছপালার বেঁচে থাকা দুরূহ হয়ে ওঠে। বিজ্ঞানীদের অন্যতম টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শন গুলিক বলছেন, একশ গিগাটন সালফার বায়ুমন্ডলে মিশে যাবার ফলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চাইতে অন্তত ২৫ ডিগ্রি নিচে নেমে যায়। তার মানে পৃথিবীর বেশির ভাগ এলাকার তাপমাত্রা তখন নেমে গিয়েছিলো শূন্য ডিগ্রির নিচে।
আপনার মতামত লিখুন :