আরিফা রাখি : ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত জ্বর যা এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। সাধারণ চিকিৎসাতেই এই রোগ সেরে যায় তবে হেমোরেজিক ডেঙ্গু মারাত্মক হতে পারে। যেহেতু এডিস মশা বাসাবাড়ির পরিষ্কার পানিতে হয় তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সচেতনতার প্রতি জোর দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যার কারণে বাড়ছে পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেয়া তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২১৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত হাসপাতালে রোগী ভর্তি হয়েছে ৫ হাজার ৬৬ জন। বর্তমানে ভর্তি আছে ২৬৬ জন। এ পর্যন্ত এ বছর ৫ জন ডেঙ্গু রোগী মৃত্যুবরণ করেছে। এবং গত ২৪ ঘন্টায় ২০ জেলায় ডায়রয়িায় আক্রান্ত হয়ে ৩০৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) মিটফোর্ড হাসপাতাল ৩৮ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ২১ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৩৫ জন, বিজিবি হাসপাতাল ৪ জন, শিশু হাসপাতালে ১২ জন, বার্ডেম হাসপাতালে ৫ জনসহ রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে ১০১ জন রোগী চিকিৎসা নেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও লাইন ডিরেক্টর পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা বলেন, ২০০০ সালে মোট ৫ হাজার ৫শ ৫১ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৭৯ ভাগ স্বাভাবিক ডেঙ্গু জ্বর ও ২১ ভাগ ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর ও মৃত্যুর হার এক দশমিক সাত। ২০১৮ সালে ডেঙ্গু রোগীর মোট সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ১শ ৪৮, মৃতের সংখ্যা ছিল ২৬ জন।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় ২৮ টি সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও দুই সিটি কর্পোরেশনের সর্বমোট ১ হাজার ৫শ জনকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া ব্যবস্থাপনায় বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছে। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট দেয়া হয়েছে। সকল চিকিৎসকের কাছে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ গাইডলাইন প্রদান করা হয়েছে।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার এ এস এম আলমগীর বলেন, এখন বর্ষাকাল চলছে। এইসময়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ঘরে এবং আশেপাশে যে কোন পাত্রে বা জায়গায় জমে থাকা পানি তিন দিন পরপর ফেলে দিলে এডিস মশার লার্ভা মরে যাবে। ব্যবহৃত পাত্রের গায়ে লেগে থাকা মশার ডিম অপসারণে পাত্রটি ঘষে ঘষে পরিষ্কার করতে হবে। ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, বালতি, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা/নারিকেলের মালা, কন্টেইনার, মটকা, ব্যাটারি শেল ইত্যাদিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে। অব্যবহৃত পানির পাত্র ধ্বংস অথবা উল্টে রাখতে হবে যাতে পানি না জমে। দিনে অথবা রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারী ব্যবহার করতে হবে।
তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে অবশ্যই নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেন । সম্পাদনা: সুতীর্থ বড়াল
আপনার মতামত লিখুন :