শিরোনাম
◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয়

প্রকাশিত : ১৬ জুলাই, ২০১৯, ০৪:০২ সকাল
আপডেট : ১৬ জুলাই, ২০১৯, ০৪:০২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শ্রমিক জীবনে বন্দী দুরন্ত শিশুর স্বপ্নময় শৈশব

আরিফা রাখি: এই মুহূর্তে বাংলাদেশে প্রায় ১৩ লাখ শিশু শ্রমিক রয়েছে, যাদের বয়স ৬-১১ বছরের মধ্যে এবং তারা বিভিন্ন ঝুঁকিপুর্ণ কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এর বাইরে ৩২ লাখ শিশু বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত রয়েছে, যাদের অনেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি শেষ করতে পারেনি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন শিশুদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা প্রয়োজন।

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত বিবেচনায় আনা হয়নি, যেমন কৃষি কাজে নিয়োজিত শিশু শ্রমিক এই সংখ্যার মধ্যে নেই। এসব কর্মরত শিশু ১০-১৫ ঘণ্টা কাজ করে থাকে। কাজের বাইরে হরহামেশাই এসব কর্মরত শিশু শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়, যা আমরা প্রায়শই বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখে থাকি। বেড়ে উঠা এইসব শিশুদের স্বপ্নগুলো বন্দী হয়ে যাচ্ছে শ্রমিক জীবনে।

সরকার গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশু শ্রমিকদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ বলে বিবেচনায় ধরে না। যদিও ২০১৫ সালে এই বিষয়ে একটি নীতিমালা অনুমোদন করা হয়েছিল। কিন্তু আইন না হওয়া পর্যন্ত নীতিমালাটির তেমন কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। এই নীতিমালা অনুসারে ১২ বছরের নিচে কোনো শিশু গৃহকর্মে কাজ করতে পারবে না। পরে অবশ্য শ্রম আইন ২০১৮তে (সংশোধিত) বয়স ১৪ করা হয়েছে। শিশুর বয়স বিভিন্ন আইনে ভিন্ন ভিন্ন উল্লেখ করা হয়েছে। যেটি খুবই বিভ্রান্তিকর। যেহেতু শিশু আইন ২০১৯ অনুযায়ী সরকার শিশুর বয়স বা ১৮ অনুমোদন করেছে, সে জন্য শিশু সম্পর্কিত সব আইনে শিশুর বয়স ১৮ হওয়া বাঞ্ছনীয়। এটি সে সময়ের দাবি।

বাংলাদেশের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাবা-মা দরিদ্রতার কারণে নিজের সন্তানদের বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত করেছে। অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে: স্কুলের পরিবেশ দারিদ্র্য এবং শিশুবান্ধব না হওয়া; বাবা-মায়ের আদি পেশা পরিবর্তন হয়ে যাওয়া; স্থানান্তরিত হওয়া; বাবা-মায়ের ঋণের বোঝা পরিশোধ করা; শিশু শ্রমিকদের চাহিদা থাকা বা শিশুরা কম পারিশ্রমিকে অনেক সময় কাজ করতে পারে। উল্লিখিত কারণে শিশুদের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত দেখা যাচ্ছে।

টেকসহ উন্নয়ন অভীষ্টের আট (৮.৭) নম্বর অভীষ্টতে পরিস্কারভাবে একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেটি হচ্ছে, সবদেশ-রাষ্ট্র সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে, যাতে করে ২০২৫ সালের মধ্যে সব দেশ-রাষ্ট্র সব ধরনের শিশুশ্রম নির্মূল করে ফেলতে পারে। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম থেকে শিশু শ্রমিক নির্মূলের চেষ্টা করা অর্থাৎ ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম খাত থেকে শিশু শ্রমিক শূন্যে নামিয়ে নিয়ে আসা। এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে সরকারকে এখনই কিছু বড় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সরকারের আরও লক্ষ্য হলো, ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের শিশুশ্রম নিরসন করা।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আরও দারিদ্র্য ও শিশুবান্ধব করতে হবে। কর্মরত শিশুদের কর্ম থেকে উঠিয়ে নিয়ে তার পরিবারের একটি স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় শিশু শ্রমিক নিরসন নীতিমালা ২০১০ অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে কোনো শিশু কাজ করতে পারবে না। শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশে শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছে। আগে ছিল অপ্রাপ্ত বয়স্ক। এখন করা হয়েছে কিশোর। এতে করে শিশুরা এখন থেকে কাজ করতে পারবে না। আইনের ব্যাখ্যার সুযোগ নিয়ে শিশুরা কলকারখানা বিশেষ করে পোশাক শিল্পে কাজ করে আসছিল। কেউ যদি শিশু শ্রমিক নিয়োগ করে, তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হবে। সংশোধিত আইনে ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোররা হালকা কাজ করতে পারবে। আগে ১২ বছরের শিশুরা হালকা কাজের এ সুযোগ পেত।

খেলাঘরের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডাক্তার লেলিন চৌধুরী বলেন, কোন পরিবারই তার সন্তানকে ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কাজে দিতে আগ্রহী হয় না। জীবনের প্রয়োজনে তারা শিশুকে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের শিশুশ্রম নিরসন করতে চাইলে সবার প্রথম তাদের সামাজিক সুরক্ষা দিতে হবে। আইন প্রয়োগের ফলে যেসব শিশু ভুক্তভোগী হবে তাদেরকে বৃত্তির ব্যবস্থা করে স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে যেন এই সকল শিশুর পরিবার এই বৃত্তিকে তাদের আয়ের বিকল্প হিসেবে নিতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়