সাইদুর রহমান: বেশিরভাগ মানুষ দাঁত পরিষ্কার করার জন্য টুথব্রাশ, টুথপেস্ট এবং ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করেন, কিন্তু এটিই সর্বজনীন নয়।
অনেক আদিবাসী গোষ্ঠী, উন্নয়নশীল দেশের মানুষ তাদের দাঁত পরিষ্কার করার জন্য ঐতিহ্যগত কৌশল ব্যবহার করেন। এর মধ্যে কিছু পদ্ধতি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর।
মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষ তাদের দাঁত পরিষ্কারের জন্য সাধারণত অর্ক গাছ (মিসওয়াক নামে পরিচিত) ব্যবহার করে। অর্ক গাছের কাঠ ফ্লোরাইড এবং অন্যান অ্যান্টিমাইক্রোকোয়াল উপাদানের ঘনত্ব যা দাঁতের ক্ষয় রোধ করে।
বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষ তাদের দাঁত পরিষ্কারের জন্য ,বিভিন্ন গাছের ডালপালা বিশেষ করে সুগন্ধিযুক্ত গাছের ডালপালা ব্যবহার করে আসছে হাজার বছর ধরে। বিভিন্ন গবেষনায় দেখানো হয়েছে, এই সকল ডালপালা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার যদি সঠিকভাবে না করা হয় তাহলে মাড়ির এবং দাঁতের ক্ষতি হয়।
কিছু সংস্কৃতিতে মানুষ আঙ্গুল দিয়ে তাদের দাঁত পরিষ্কার করে। গ্রামীণ ভারত, বাংলাদেশ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকার কিছু মানুষ তাদের দাঁত পরিষ্কারের জন্য ইট পাউডার, কাদা, লবণ বা ছাইব্যবহার করে। যদিও এই উপাদানগুলো দাগ এবং প্লেক অপসারণ করে কিন্তু ফ্লোরাইড ধারণ করে না যার ফলে সংবেদনশীল দাঁত এবং মাড়ির ক্ষতি হয়।
চারকোল, যা প্রথাগত দাঁত পরিষ্কারের পাউডার , কিছু আধুনিক দাঁতপেস্ট এবং টুথব্রাশে এখন এটি উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া কে নিষ্ক্রিয় করে।
পান ও সুপারি (আরনাল বাদাম) যা প্রায়ই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ব্যবহার করা হয় দাঁত পরিষ্কারের জন্য, যা উল্টো দাঁত ও মাড়িতে দাগ ফেলে। এছাড়াও, পান ও সুপারি ওরাল ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
দাঁত পরিষ্কারের আরেকটি পদ্ধতি আছে যা প্রাচীন আয়ুর্বেদিক পদ্ধতি, এখানে সামান্য পরিমাণ নারিকেল,তিল,সূর্যমুখী বা অলিভ অয়েল ১৫ মিনিট মুখের মধ্যে রাখা হয়। এটি ব্যাকটেরিয়া এবং টক্্িরন ধুয়ে ফেলে বলে বিশ্বাস করা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সবচেয়ে সাধারণ রোগের মধ্যে রয়েছে দাঁতের ক্ষয় (ক্ষয়রোগ) এবং গাম ডিজিজ( গঞ্জেভিটিস এবং পেডটিটাইটিস)। এই রোগগুলি প্রতিরোধযোগ্য, এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি তথা দাঁত পরিষ্কারের পদ্ধতি উন্নত করা প্রয়োজন।