আসাদুজ্জামান সম্রাট : বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বর্তমানে দেশের প্রায় ৯৩ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় রয়েছে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুসারে আগামী বছরের (২০২০ সাল) মধ্যেই দেশের শতভাগ জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে।
বুধবার চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে সংসদকে এ তথ্য জানান তিনি।
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদ ইসলামের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, দেশে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত ২৭টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে ২০টি থেকে গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। এ সকল গ্যাসক্ষেত্রে খননকৃত ১১২টি কূপের মাধ্যমে গ্যাস উৎপাদন করা হচেছ, যার উত্তোলনযোগ্য মজুদ ২৭.৮১ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। গত এপ্রিল পর্যন্ত মোট ১৬.৮৯ টিসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। ফলে অবশিষ্ট মজুদের পরিমাণ ১১.০৫ টিসিএফ।
সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তারের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, গৃহস্থালি ছাড়া অন্যান্য সকল শ্রেণীতে (বিদ্যুৎ, সার, শিল্প ক্যাপটিভ, চাবাগান, সিএনজি ও বাণিজ্যিক) মিটারের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। গৃহস্থালি পর্যায়ে গ্যাসের অপচয় রোধে ও জ্বালানির দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে গত মে মাস পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ আট হাজারটি প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে। দেশের সকল গৃহস্থালি গ্রাহক পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
মো. হারুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, সারা দেশে বিদ্যুতের হাই ভোল্টেজ ও লো ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যুৎখাতে উৎপাদন, বিতরণ ও সঞ্চালন প্রকল্প, উৎপাদনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সঞ্চালন খাত এবং বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিতরণ সেবাকে উন্নত করার প্রকল্প নেয়া হয়েছে।
মো. মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, অবৈধ বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ, মিটার টেম্পারিং এবং সকল অপচয় রোধকল্পে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বিদ্যুতের ক্ষেত্রে পাঁচটি এবং গ্যাসের ক্ষেত্রে পাঁচটি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
মোহাম্মদ শহিদ ইসলামের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাতারবাড়ী ২৬০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্টের ইপিসি কন্ট্রাক্টরের কার্যক্রম ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট শুরু হলেও গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত ইপিসি কাজের অগ্রগতি ১৮.৩ শতাংশ এবং মে পর্যন্ত ভৌত অগ্রগতি ২৪.৩৮ শতাংশ।
নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, দেশে ব্যাপক হারে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে বেসরকারি খাতে মোট ৬৮৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১১টি গ্রিড টাইড বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।
এম আবদুল লতিফের অন্য প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির পর পাঁচটি আন্তর্াতিক তেল কোম্পানির (আইওসি)সঙ্গে চারটি ব্লকের জন্য স্বাক্ষরিত চারটি উৎপাদন বন্টন চুক্তির (পিএসসি) মাধ্যমে গভরি এবং অগভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ২০১৪ সালের পর থেকে এ সকল ব্লকে প্রায় ১৩ হাজার লাইন কিলোমিটার ২ডি সাইসমিক সার্ভে এবং ৩০৫ বর্গকিলোমিটার ৩ডি সাইসমিক সার্ভে সম্পন্ন হয়েছে। অগভীর সমুদ্র ব্লকে ২০২১ সালের মার্চ মাসের মধ্যে চারটি অনুসন্ধান কূপ খনন করা হবে।
সম্পাদনা: অশোকেশ রায়
আপনার মতামত লিখুন :