ইসমাঈল হুসাইন ইমু : জঙ্গিবাদ দমনে আমরা তৃপ্ত হলেও এ নিয়ে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। জঙ্গিবাদের ধরন প্রতিনিয়ত পাল্টাচ্ছে। ভবিষ্যতে আমাদের সাইবার হামলা মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। ভবিষ্যতে ডিজিটাল বোমা হামলারও আশঙ্কা রয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি সংলাপে পুলিশের এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান এডিশনাল আইজি মোহাম্মদ আবুল কাশেম এসব কথা বলেন।
সংলাপে ১০ দফা সুপারিশসহ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সংলাপ আয়োজনে সহযোগিতা করেছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সম্প্রীতি প্রকল্প। সংলাপটি সঞ্চালনা করেন ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন।
আবুল কাশেম বলেন, ধর্ম মানুষের আত্মশুদ্ধির জন্য। খারাপ যা কিছু তা থেকে বিরত রাখার জন্য। সব ধর্মই কল্যাণের কথা বলে। কোন ধর্মেই মানুষকে হত্যা করার বিধান নেই। তবে মানুষ ডিপ্রাইভ হলে আয় উপার্জন না থাকলে ক্ষোভ থেকে সন্ত্রাস তৈরি হতে পারে। তবে অনেকে না বুঝে জঙ্গিবাদি কর্মকান্ডে জড়িত হচ্ছে। ইসলাম কখনো সন্ত্রাসকে সমর্থন করে না। একইভাবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খিস্ট্রান ও শান্তির কথা বলে। নিজের ধর্মের প্রতি আস্থা রেখেও অন্যের ধর্মকে শ্রদ্ধা জানানো যায়।
মূল প্রবন্ধে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, প্রত্যেকটি ধর্মেরই মূলমন্ত্র শান্তি, সহিষ্ণুতা, সম্প্রীতি ও মানবকল্যাণ। যারা ধর্মের লেবাসে সহিংস উগ্রবাদী কর্মকান্ডে লিপ্ত হচ্ছে তাদের প্রতিরোধে ধর্মের সঠিক ব্যাখা সর্বত্র প্রচার করতে হবে। মনে রাখতে হবে কোনো ধর্মই অন্য ধর্মের প্রতিপক্ষ নয়। মহানবী (সা.) সকল ধর্মের মানুষের সাথে সুসম্পর্ক রেখে চলেছেন, শান্তির বাণী প্রচার করেছেন।
প্রবন্ধে সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধে কিরণ তাঁর ১০ দফা সুপারিশে বলেন- মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র হিসেবে জুম্মার নামাজের খুৎবায় জঙ্গীবাদ বিরোধী বয়ানের পাশাপাশি মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময়ও জঙ্গীবাদের বিপক্ষে বক্তব্য তুলে ধরা উচিত। মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তকে সহিংস-উগ্রবাদ ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধকল্পে বিভিন্ন ধরনের উদ্দীপনা ও শিক্ষামূলক নিবন্ধ, কবিতা, ছড়া আরও বেশি বেশি অন্তর্ভুক্ত করা হলে কিশোর বয়স থেকেই জঙ্গিবাদ বিরোধী মানসিকতা তৈরি হবে বলে উল্লেখ করেন জনাব কিরণ। তিনি আরো বলেন ধর্মীয় স্থিতিশীলতা অক্ষুন্ন রাখতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর ধর্মীয় নেতা ও নেতৃত্বের অংশগ্রহণে রাষ্্রীয়ভাবে আন্তধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করতে হবে। একইসাথে সরকারকে দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সহিংস উগ্রবাদ মোকাবেলায় কাজ করতে হবে। সর্বক্ষেত্রে দৃশ্যমান সমস্ত ধরনের সামাজিক বঞ্চনা, বৈষম্য কমিয়ে আনা এবং সর্বস্তরে সুশাসন জোরদার করার উপর তিনি গুরুত্ব দেন।