সমীরণ রায়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ১১ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা। তাদের দাবি বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যোগ্যদের স্থান করে দেওয়া। তবে তাদের এ আন্দোলন গত বুধবার ঈদের দিনও বৃষ্টিতে ভিজে অব্যাহত ছিলো। কিন্তু ঈদের পরদিনও আন্দোলনে থাকা পদবঞ্চিতদের খোঁজ নেয়নি ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশ বিষয়ক উপ-সম্পাদক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সজীব বলেন, ছাত্রলীগ আমাদের পরিবার। আমরা আশা করেছিলাম, পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের খোঁজ-খবর নেওয়া হবে। কিন্তু সেটি হয়নি। ছাত্রলীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কোনো নেতা আমাদের খোঁজ নেননি। এমনকি ঈদের শুভেচ্ছাও জানাননি।তাদের আন্দোলন যৌক্তিক। এই যৌক্তিক আন্দোলন মেনে নেওয়ার জন্য ছাত্রলীগের দায়িত্বে থাকা নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের এই শিক্ষার্থী।
ছাত্রলীগের গত কমিটির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপ-সম্পাদক আল মামুন বলেন, আমরা ১১তম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। ছাত্রলীগের স্বার্থে খেয়ে না খেয়ে এখানে এতদিন ধরে পড়ে আছি। এতদিন ধরে যাদের সঙ্গে ছাত্র রাজনীতি করেছি, ঈদের একদিন পেরিয়ে গেলেও তাদের কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি। এটা খুব দুঃখজনক।আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র গত কমিটির কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল ঈদের আগেই যেন বিতর্কিতদেরকে বাদ দিয়ে কমিটি করা হয়। সেই দাবি এখনো পূরণ হয়নি বলে আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ঈদের দিন ছাত্রলীগের এই বঞ্চিত নেতাদের খোঁজ নিয়েছেন স্বতন্ত্র জোটের ডাকসু সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী অরণি সেমন্তি খান। ঈদের দিন বিকেলে রাজু ভাস্কর্যে আন্দোলনরত এসব নেতাদের জন্য খাবারও নিয়ে আসেন তিনি। তবে আন্দোলনরতরা অরণির দেখতে আসা প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা অন্যান্যরা হলেন- গত কমিটির উপ-দপ্তর সম্পাদক নকিবুল ইসলাম সুমন, উপ-কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক মুরাদ হায়দার টিপু, স্কুলছাত্রবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সমাজসেবা সম্পাদক রানা হামিদ, কবি জসিমউদদীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ খানসহ আরও অনেকে।
উল্লেখ্য, সম্মেলনের একবছর পর গত ১৩ মে গঠিত হয় ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। নবগঠিত এ কমিটি থেকে সর্বশেষ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ ও অবস্থানে থাকা অর্ধশত নেতা বাদ পড়েন ও প্রত্যাশিত পদবঞ্চিত হন। ফলে সেদিনই এ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে এবং বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে যোগ্যদের পদ দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করছেন পদবঞ্চিত ছাত্রনেতারা।
আপনার মতামত লিখুন :