জাবের হোসেন : সিঙ্গাপুরকে মাঝে মাঝে খুব বেশি নিয়ন্ত্রিত দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আসলে তারা যে বস্তুগত এবং এমনকি সামাজিক সাফল্য অর্জন করেছে, তার সাথে এই শৃঙ্খলার বিষয়টি জড়িত। এই নেতিবাচক পরিচিতির জায়গায় ভুটানের বিরুদ্ধে প্রায় কোন দোষ নেই বললেই চলে। কিন্তু সেজন্য এটা বলা যাবে না যে, সুখের সাথে ঘনিষ্ঠ বিবেচিত হওয়ায় তাদের কোন বোঝা বহন করতে হবে না। সাউথ এশিয়ান মনিটর
কিছু মানুষ বিস্ময় প্রকাশ করে থাকে যে জাতিসংঘের ওয়াল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট ২০১৯-এ ভুটানের অবস্থান কেন এক নম্বরে না হয়ে ৯৫ নম্বর হয়েছে। অন্যদিকে সিঙ্গাপুর পুঁজিবাদকে গ্রহণ করেও অপেক্ষাকৃত ভালো জায়গায় ৩৪তম অবস্থানে রয়েছে।
এই সত্যটা লুকিয়ে আছে জাতিসংঘের তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়ার মধ্যে এবং কিভাবে তারা দেশভেদে প্রশ্ন তৈরি করেছে তথ্য সংগ্রহের জন্য এবং সে সব তথ্যের বিবেচনায় বিভিন্ন দেশের মধ্যে র্যাঙ্কিংয়ের এই ব্যর্থ চেষ্টা করেছে।
তাছাড়া, ভুটান কখনও নিজেদের বিশ্বের সবচেয়ে সুখী জায়গা হিসেবে দাবি করেনি। বরং তারা যে সিস্টেমটা তৈরি করেছে, সেখানে ব্যক্তির সুখের চেয়েও সুশাসনের দিকে নজর দেয়া হয়েছে বেশি। নেতৃত্বের মধ্যে সুখ পরিমাপের যে বৈশ্বিক মাপকাঠি, সেটাকে অর্জনের জন্য তারা গ্রোস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস (জিএনএইচ) সূচক ব্যবহার করে থাকে, যাতে সমাজের অগ্রাধিকারগুলোকে সামগ্রিকভাবে বিন্যাস্ত করা যায়।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর যেটা করেছে, সেটা হলো সরাসরি মার্কেটিং মূলত ব্যবসা থেকে ব্যবসা (বিটুবি) পর্যায়ে। ভুটান যেটা করতে পারে, তাদের যে কোন শিল্প খাতে দেশের সুখ ব্র্যান্ডকে ব্যবহার করে নিজেদের একটা ব্র্যান্ড মূল্যমান গড়ে তুলতে পারে।
সুখ বলতে যত রকম ব্যাখ্যা দেয়া হয়, এর মধ্যে আমার সবচেয়ে পছন্দের হলো দীর্ঘস্থায়ী আনন্দ, যেটা অধিকাংশ মানুষের দীর্ঘমেয়াদি ব্যক্তিগত লক্ষ্য, কিন্তু এটাই আবার জাতীয় পর্যায়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।
এটা সত্যি যে, প্রাত্যহিক জীবনে অধিকাংশ ভুটানিজ তাদের জীবনযাত্রা নিয়ে এতটাই তৃপ্ত যে, তাদেরকে জীবনের এই সাধারণ আনন্দকে পরিত্যাগ করে প্রথম দর্শনে আপাত বস্তুবাদী একটা সাফল্য অর্জনের দিকে ধাবিত করতে হলে, সেখানে আরও জোর প্রচেষ্টা থাকতে হবে। সম্পাদনা- কায়কোবাদ
আপনার মতামত লিখুন :