ফাতেমা ইসলাম : উড়োজাহাজ বিকল হয়ে পড়ে আছে ভিয়েতনামে। অথচ ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ১০ কোটি টাকা গুনতে হচ্ছে বাংলাদেশ বিমানকে। আবার চুক্তির শর্ত পূরণ করতে না পারায় উড়োজাহাজ দুটি ফেরতও নিচ্ছে না মিশরীয় বিমানসংস্থা। ইজিপ্ট এয়ার থেকে উড়োজাহাজ লিজ নিয়ে এমনই বেকায়দায় পড়েছে বাংলাদেশ বিমান। এ অবস্থায় কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি সুরাহার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শরণাপন্ন হয়েছে বিমান মন্ত্রণালয়। সময় টিভি।
২০১৪ সালে মিশরীয় বিমান সংস্থা ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ট্রিপল সেভেন ই.আর মডেলের দুটি উড়োজাহাজ লিজ নেয় বাংলাদেশ বিমান। ৫ বছরের ওই চুক্তির শর্ত ছিল, যেভাবে উড়োজাহাজ নেয়া হয়েছে ফেরত দিতে হবে সে অবস্থায়।
কিন্তু ইঞ্জিন সমস্যাসহ নানা কারিগরি জটিলতায় আয় তো দূরের কথা, বারবার বিকল হয়ে এখন বিমানের গলার কাঁটা উড়োজাহাজ দুটি। দফায় দফায় মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে এরই মধ্যে ব্যয় হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। আর গেল এক বছর ধরে দুটিই বিকল অবস্থায় পড়ে আছে ভিয়েতনামে। অথচ ওই উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ না পাওয়ায় মেরামত করিয়ে ফেরত দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু, চুক্তি মোতাবেক প্রতিমাসে ঠিকই ভাড়া গুনতে হচ্ছে ১০ কোটি টাকা। এ বিষয়ে ইজিপ্ট এয়ার'র সঙ্গে দেনদরবার করেও কোন সুরাহা করতে পারেনি বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক বলেন, এটা বিমানের জন্য সত্যিই একটা মারাত্মক সমস্যা। আমরা সরকারিভাবে উদ্যোগ নিয়েছি, পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় মিশরকে চিঠি পাঠাবে, পরে সেখানে গিয়ে আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিব।
বিমানের সাবেক কর্মকর্তারা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে চলছে এমন বিমানের স্বার্থবিরোধী উড়োজাহাজ ভাড়া নেয়ার বাণিজ্য। যেগুলো ফেরত দিতে গিয়ে গচ্চা দিতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। তাই এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এসব অনিয়ম বন্ধ হবে না বলে মনে করেন তারা।
বাংলাদেশ বিমানের সাবেক পরিচালক নাফিস ইমতিয়াজ উদ্দীন বলেন, যখনই লিজ নেয়া হয়েছে তখনই তা বিমানের বিপক্ষে গেছে। ভুল সিদ্ধান্তের জন্য কে দায়ী তা বের করতে হবে। উড়োজাহাজ লিজ ও টিকিটি বিক্রিতে অনিয়মসহ বাংলাদেশ বিমানের বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান সচিব।