শিরোনাম
◈ নিষেধাজ্ঞা শিথিল হতে পারে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র সফরে ◈ সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় আরও পাঁচ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি ◈ ঢাকার ২৬টি হোটেল-রেস্তোরাঁয় পুলিশ সদস্যদের জন্য মূল্য ছাড়  ◈ বনানীর আগে বাসে যাত্রী তুললেই মামলা: ডিএমপি কমিশনার ◈ লু’র সফরকে কেন্দ্র করে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা অস্থিরতায় ভুগছেন: রিজভী ◈ ‘জেনোসাইড জো’: যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিক্ষোভ বাইডেনের পুনর্নির্বাচনকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে ◈ গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড দেশের ওপর ঋণের বোঝা বাড়াচ্ছে: টিআইবি ◈ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সাবেক বাপেক্স এমডির সাক্ষ্য ◈ তাসকিনকে সহ অধিনায়ক করে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল ঘোষণা

প্রকাশিত : ২৮ মার্চ, ২০১৯, ০৪:২৬ সকাল
আপডেট : ২৮ মার্চ, ২০১৯, ০৪:২৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আঙ্গুর একটা উসিলা

ইকবাল আনোয়ার : ছোট জামাই এসেছেন, আধা পোয়া আঙ্গুর নিয়ে, মৃত্যুসজ্জায়, নব্বই বছরের শশুরকে দেখতে। মাটির ঘর। ছাদ দরজা টিনের। দরজার খিলান খটখটে কাঠের। আঙ্গুর। অমূল্য ফল। শক্তিবর্ধক। রোগীর প্রধান পথ্য। রোগীকে খাওয়ালে তার তাগৎ বেড়ে যায়, অল্প রোগ হলে আঙ্গুরেই সেরে যায়। ভাগ্যবানরা কখনো এক দুটা খাওয়ার সৌভাগ্য পায়। আকারে গোল, বড়ো পাথরের তসবীর গোটার মতো। কিছুটা পচনে খয়ারী, কুচকানো। গন্ধে মাছি বসে। তবু আঙ্গুর বলে কথা। এ বাড়ি আজ ধন্য। সেই সম্পদ, আধাপোয়া! অনেক অনেক। পানিতে ধুয়ে নিয়ে রোগীকে দিতে হবে। সৌভাগ্যবান রোগী। দু’একটা শিশুদের দাও। ওরা আমাদের আদরের ধন, খেয়ে দেখুক। একদানা খেয়ে শিশুর জীবন ধন্য হোক। এতোদিন শুনেছে কেবল। আজ দেখেছে প্রথম এবং খেয়েছে। কি যে মিষ্টি। এ হলো বেহেশতের ফল।

বর্তনে নিয়ে পানি থেকে ধুয়ে রোগীর মুখে দেয়া হবে যখন, তিনি তখন দাঁতে দাঁত আটক হয়ে পড়েছেন এবং কিছুটা অচেতন। সব কিছু ঘোলা তার, দৃশ্য এবং চিন্তা, সবই আবছা কুয়াশা মোড়া। দাঁতের কপাট আঙ্গুলে খোলে মেয়ে তার বাবা বলে ডাকে। বাবা শুনে কি শুনে না! বাবা, আঙ্কুর। তুমি না আঙ্কুর খাইতে চাইছিলা। খাও, ছুইট্টা দুলাবাই আনছে। ওওম। একটা ইষৎ গমগমে আওয়াজ বের হয় বৃদ্ধের মুখ থেকে। আঙ্গুর চাবানোর শক্তি নেই তার। সুতরাং আঙ্গুলে চিপে তার মুখে রস দেয়া হয়। সে রস গাল বেয়ে গড়িয়ে পরে। ছোট খয়ারী মাছি গালে বসে যায়, কোথা থেকে চট করে এসে, মেয়েটি মাছি তাড়ায়। তারপর ঘাড় তার হঠাৎ কাত হয়ে গেলে, কান্নার রোল পড়ে যায় ঘরে। এ ঘর ও ঘর থেকে সবাই এসে মৃত্যু- যাত্রীর চারপাশে ভিড় করে। চলে হাউ-মাউ। কে একজন কলেমা পড়ে, স্মরণ করিয়ে দেয়। অন্যরা যার যার নাম করে তার মুখে এক একটা আঙ্গুরের রস চিপে দেয়। শেষ আপ্যায়ন। তার পর নিথর হতে আর সময় লাগে না।

অতঃপর দুঃখ করে পাড়াজন যার যার ঘরে আপাতত চলে যায়। আবার আসবে জরুরি কাজ সেরে। তখন মৃত্য ও মৃতজন নিয়ে কথা হবে বিনয়-স্মৃতি তর্পনে। তবে এখন পরম তৃপ্তিতে, এ কথা বলে বলে তারা যাচ্ছে যে, যাক, যাবার কালে আওস মিটাইয়া তাইনে আঙ্কুর খাইছেন। বড়ো ভাগ্যবান। জামাই আনছিলো বলে এনা খাইছেন। আঙ্কুর বড়ো শক্তিশালী। আঙ্কুর বড়ো মিডা, আঙ্কুর হইলো ফল ফ্রুটের রাজা, আঙ্কুর খায় ভাগ্যবানে, আঙ্কুর কি যা তা কথা! তাজিমের সাথে নাম নেবার সময় আঙ্গুরের সাথে ফল লাগায়ে বলতে হয়।

ডাক্তারি মতামত : আঙ্গুর ফল বটে তবে উচ্চ ফল নয়। যত দামে তারে কেনা হয়, তার চেয়ে পুষ্টিমান তার অনেক কম। আঙ্গুর চিনির বিকল্পের মতো, সাথে সামান্য কিছু মিনারেল আছে। এ গুণ প্রায় সব ফলেই আছে। দেশীয় ফলে অনেক বেশী। বিদেশে যেখানে আঙ্গুর বেশী ফলে সেখানে মানুষের চেয়ে ঘোড়ায় তা বেশী খায়। চিনি বলে তার থেকে ভালো মদ হতে পারে। মানুষটি রস গলায় আটকে শ্বাস রোধের কারণে হয়তো মরেছে। প্রায় অজ্ঞান বলে তার গিলার ক্ষমতা ছিলোনা, তাই রস সব শ্বাস নালীতে গেছে। শেষ কথা: আঙ্গুর খেতে চেয়েছিলেন তিনি। সে সাধ পুরণ হয়েছে। ‘হয়াত-মৌত’ আল্লাহর হাতে। আঙ্গুর একটা উসিলা মাত্র। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়