সাত্তার আজাদ: উচ্চ রক্তচাপে স্বস্তিদায়ক হওয়াতে একসময় সিলেটে উৎপন্ন হওয়া ঔষধি ফল কাটালেবু ব্যাপক চাষ হত। কেমিক্যাল মিশ্রিত ঔষধের বাজারে ফলটি কদর হারায়। সেই থেকে ফলটি বিলুপ্তপ্রায়। বর্তমানে ঔষধি এ ফলটির চাষ বাড়াতে কাজ করছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় কাচালেবু ফলটি অত্যধিক টক। এক সময় ওষুধ স্বল্পতায় উচ্চ রক্তচাপে ফলের রস মাথায় দেওয়া হত। রস খেলেও উচ্চ রক্তচাপে নিরাময় পাওয়া যেত। তাই ফলটির রস তুলে বোতলে ভরে রাখা হত। শুধু সিলেটে উৎপন্ন হওয়া লেবু জাতীয় সাইট্রাস প্রজাতির ফলটির নাম কাটালেবু। সিলেটে স্থানীয়ভাবে কাটাজামির হিসেবে পরিচিত।
সিলেটের টিলার ভাজে বা উঁচু জমিতে কাটালেবু জন্মায়। গাছ ১৫ থেকে ২০ ফুট উঁচু হয়। গাছে প্রচুর লম্বা কাটা থাকে। এই কাটার কারণে হয়ত ফলটির নাম কাটালেবু বা কাটাজামির। ফলটি কমলার আকারে অমসৃণ একটু লম্বাটে। প্রতি গাছে ফল ধরে ৫০০-৭০০টি। সিলেটে ঔষধি ছাড়াও কাটালেবুর রস তুলে মাছ দিয়ে কান্না করে খাওয়া হয়।
বৃহত্তর সিলেটের বড়লেখা, জুড়ি, কুলাউড়া, রাজনগর, কমলগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাটে এখনো কিছু বাড়িতে ফলটি পাওয়া যায়। তবে প্রায় বিলুপ্ত ফলের তালিকায় থাকা এই লেবু চাষ হয়না। কোথাও অবহেলায় বেড়ে উঠে। চারা রোপণের তিন বছরের মধ্যে গাছে ফল ধরে। ভিটামিন সি থাকায় ফলটি শরীরের জন্য উপকারি।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলটির গাছ আছে। এই ফলের চাষ বাড়াতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এনিয়ে গবেষণাও চলছে। ফলটি প্রক্রিয়াজাত করে কিছু তৈরি করা যায় কি না তা নিয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী চেষ্টা করছে। এতে সহযোগিতা করছেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও।
সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আলতাবুর রহমান বলেন, সিলেটের মাটি কাটালেবু চাষের জন্য খুবই উর্বর। ফলটি শুধু সিলেটেই জন্মায়।