মারুফুল আলম : অব. লেফট্যানেন্ট জেনারেল মইনুল ইসলাম বলেছেন, পিলখানার বিডিআর বিদ্রোহের পর সৈনিক এবং অফিসারদের মাঝে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করানো খুব কঠিন হয়ে পড়েছিলো। বিদ্রোহের পর বিডিআর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো মইনুল ইসলামকে, যিনি পরবর্তীতে লেফট্যানেন্ট জেনারেল হিসেবে অবসরগ্রহণ করেন। মইনুল ইসলামের ভাষায়, তাদেরকে প্রায়ই বলতাম, তোমাদের কী নাই? খাওয়া, বেতন, অস্ত্র সবই আছে। তারা বলতো, স্যার, সৈনিক এবং অফিসারের মাঝে যে বিশ্বাস, সেটাই চলে গেছে। বিবিসি বাংলা।
জেনারেল মইনুল ইসলাম বলেন, আমি যখন একটি বিওপিতে যাই, আমার সাথে এডিসি ছিলেন। তিনি আমার কাপড় ধরে টানছেন। জিজ্ঞেস করলাম, কি ব্যাপার, এমন করছেন কেনো? তিনি বললেন, স্যার মেশিনগানে গুলি লাগানো আছে। বিওপি’র নিয়ম হচ্ছে, কোন অফিসার গেলে সবাই অস্ত্র নিয়ে নিজ নিজ পজিশনে চলে যায়, আর অস্ত্রে গুলি লাগানো থাকে। সম্ভবত ভিওপি ছিলো মেহেরপুরে। মেশিনগানের সামনে আমি। এডিসিকে বললাম, সরে যান, কিছু হবে না। মেশিনগানের পাশে গিয়ে সৈনিককে জিজ্ঞেস করলাম, মনোবল কেমন? মেশিনগানের গুলি কার জন্য? সে উত্তর দিলো, সীমান্তের ওপার থেকে কেউ আসলে তার জন্য। বললাম, তোমরা তো এই গুলি ব্যবহার করলে নিজেদের অফিসারদের ওপর, এটা কেমন কথা? সে বললো, বড় ভুল হয়ে গেছে।
মইনুল ইসলাম বলেন, যে কোন সুশৃঙ্খল বাহিনীতে ছোট-খাটো বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। তবে এক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসছে বলে মনে করেন তিনি। মইনুল ইসলাম আরো বলেন, সৈনিকদের সঙ্গে লিডারের সম্পর্ক হবে আত্মিক। যখন এটা টাকা-পয়সার দিকে চলে যাবে, তখন একটা বাহিনীতে সমস্যার সৃষ্টি হবে।
বিডিআর বিদ্রোহের এই ঘটনা থেকে একটি বড় শিক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, যারা নেতৃত্বে আছেন তারা অধীনস্থদের কথা শুনবেন। বিডিআর এর ডাল-ভাত কর্মসূচি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সৈনিকদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ ছিলো বলে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উঠে এসেছে।
আপনার মতামত লিখুন :