শিরোনাম
◈ আবারও মে‌সির জোড়া গোলে ইন্টার মায়ামির জয় ◈ এখন থেকে আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নাম থাকবে না: জ্বালানি উপদেষ্টা ◈ ‘তুমি কেন ফুয়েল কেটে দিলে?’ ভারতীয় বিমান বিধ্বস্তের আগে পাইলটদের শেষ ককপিট ভয়েস রেকর্ডিং ◈ দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসীদের জন্য সুখবর: মৃত্যু হলে লাশ দেশে পাঠাবে সরকার, ক্ষতিপূরণ মিলবে বীমার আওতায় (ভিডিও) ◈ বিশ্বের সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হতে যাচ্ছে ভারত: পিউ রিসার্চ ◈ বেপরোয়া বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ছয় মাসে নিহত ৪৩ ◈ স্প‌্যা‌নিশ ক্যাবরেরাই থাক‌ছেন বাংলা‌দেশ ফুটবল দ‌লের কোচ ◈ সন্ধ‌্যায় নেপালের বিরু‌দ্ধে লড়াই‌য়ে নাম‌ছে বাংলা‌দে‌শের মে‌য়েরা ◈ ঢাকায় হবে এশিয়া কাপের সভা, ভারত অংশ নে‌বে না ◈ এবার যে কারণে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করলেন ড. ফয়জুল হক

প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০১:৫৫ রাত
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০১:৫৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঘুরে আসুন শেরপুরের মন হারানো গ্রাম “হাড়িয়াকোনা”

রফিক মজিদ/তপু হারুন: মন হারানো গ্রাম হাড়িয়াকোনা। শেরপুর জেলার শ্রীবরর্দী উপজেলার ভারতের মেঘালয় প্রদেশ সীমান্তের গারো পাহাড়ের সবুজে ঘেরা আদিবাসী গারো সম্প্রদায় অধ্যুষিত এ গ্রামে প্রায় এক হাজার মানুষের বসবাস।

উচু নিচু পাহাড়ের পথ ধরে চলতে চলতে ক্ষনে ক্ষনে চোখে পড়বে পাহাড়ের চূড়ায় আদিবাসীদের টং ঘর। এ গ্রামের সিংহ ভাগ মানুষ কৃষি কাজ আর দিন মুজুরের উপর নির্ভরশীল। ফলে পাহাড়ের চূড়া এবং ঢালের দু’ধার জুড়ে শুধু চোখে পড়ে করলা, জিঙ্গা, ধুন্ধল, বেগুন, চিচিংগা, লাউ, আদা, হলুদ, গীষ্ম কালীন টমেটো, কাসাভাসহ বিভিন্ন সব্জীর বাগান এযেন পাহাড় জুড়ে সবুজের লিচা বিছান হয়েছে উচু-নিচু পাহাড় বেষ্টিত উত্তর হাড়িয়াকোনা, মধ্য হাড়িয়াকোনা, দক্ষিণ হাড়িয়াকোনা এবং কুমার ঘাটিসহ ৪ পাড়া নিয়ে গঠিত হাড়িয়াকোনা। চারিদিকে পাহাড় বেষ্টিত এ গ্রামের উত্তরে ভারতের পুরাকাশিয়ার রামখং পাড়া এবং পশ্চিম পাশে রয়েছে জামালপুরের বক্সীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের দিঘলাকোনা গ্রাম।

গ্রামের মাঝখান দিয়ে পাহাড়ের গা ঘেষে বেশ কয়েকটি পাহাড়ি ছড়া বয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও উন্নত হয়নি। পাহাড়ের ওই বয়ে যাওয়া ছড়ার ঠান্ডা পানির উপর দিয়ে হেঁটে চলার মজাই আলাদা। মনে হবে ছড়ায় ঝাপিয়ে গোছল করতে পারলে সরির প্রশান্তি হতো। তবে এর মন মাতানো এবং মন ভোলানো প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেকোন প্রকৃতি প্রেমীকে বিমোহীত করবে। হাড়িয়াকোনার মনোরম দৃশ্য দেখে ফিরে আসার সময় বার বার পেছন ফিরে তাকাতেই হবে ভ্রমনকারিকে।

হাড়িয়োকোনা গ্রামে কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় এ গ্রামের শিশুদের ভরসা স্থানীয় খ্রীষ্টান মিশনের ক্যাথলিক এবং ব্যাপটিকস গোত্রের প্রতিষ্ঠিত ৩য় শ্রেণী পর্যন্ত পৃথক দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্থানীয়দের নিজ উদ্দ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হাড়িয়াকোনা আদিবাসী উচ্চ বিদ্যালয় এ গ্রামের একমাত্র সর্বচ্চো বিদ্যপিঠ।

তাই এ গ্রামে অতি জরুরী ভাবে রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ণ এবং বিদ্যুতের ব্যবস্থা হলেই পাল্টে যাবে গ্রামের চিত্র। সেই সাথে জেলার বিভিন্ন কৃষি খাত বিশেষ করে সবজি উৎপাদনে সমৃদ্ধি বাড়বে। এছাড়া এ গ্রামের নৈসর্গিক প্রকৃতিক দৃশ্যের কারণে গড়ে উঠতে পারে সম্ভামনাময় পর্যটন কেন্দ্র।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সমাজ কর্মী ও লেখক প্রাঞ্জল এম সাংমা জানান, অপার সম্ভাবনা থাকার পরও আমাদের গ্রামে আজো বিদুৎ ও রাস্তা-ঘাটের কোন উন্নয়ন হয়নি। শুধু তাই নয় এ গ্রামে কেবল মাত্র ইপিআই এর টিকা দান কার্যক্রম ছাড়া সরকারী আর কোন পরিসেবা আমাদের গ্রাম স্পর্শ করেনি। ফলে এ গ্রামে উৎপাদিত নানা সবজি বাজারজাত করতে নান ভোগান্তি পোহাতে হয়। শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার লোকদেরকে চলাফেরা করতে হয় নানা ঝুকি নিয়ে। ফলে এ ডিজিটাল যুগেও আমারা এনালগে পড়ে আছি।

যেভাবে যাবেন : শেরপুর জেলা সদর থেকে গ্রামটির দুরত্ব ৪৪ কিলোমিটার। এরমধ্যে শেরপুর জেলা সদর থেকে শ্রীবর্দী উপজেলা সদরের দুরত্ব ২২ কিলো এবং উপজেলা সদর থেকে সোজা উত্তরে কর্ণঝোড়া বাজারের দুরত্ব ১৫ কিলো। এরপর আরো ২ কিলো উত্তরে পাহাড়ি বাজার মেঘাদল বা (স্থানীয় নাম) শয়তান বাজার। এ মেঘাদল বাজার পর্যন্ত রাস্তা পাকা হলেও মেঘাদলের উত্তরে আরো ৫ কিলো কাঁচা রাস্তা গিয়ে ঠেকেছে হাড়িয়াকোনা গ্রামে।

সরাসরি ঢাকা থেকে প্রাইভেট কারে ময়মনসিংহ হয়ে শেরপুর জেলা শহরে আসতে হবে। পরে শহর থেকে খোয়ারপাড় হয়ে শ্রীবরদী উপজেলা সদরে এবং সেখান থেকে সোজা উত্তরে কর্ণঝোড়া বাজার হয়ে হাড়িয়াকোনা গ্রাম।আর যদি কেউ বাসে আসতে চান তবে মহাখালি বাস স্ট্যান্ড থেকে শেরপুর এর বাসে শেরপুর জেলা শহরে এসে একই ভাবে হাড়িয়াকোনা যাওয়া যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে সিএনজি অথবা ভাড়ায় চালিত প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসে যেতে পারবেন ওই গ্রামে। তবে বর্ষায় বা বৃষ্টি’র দিন থাকলে ২ থেকে ৩ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পায়ে হেটে যাওয়ার প্রস্তুতিও নিয়ে আসতে হবে।

থাকা ও খাওয়া : শহরের নিউমার্কেট এলাকায় ও আশপাশে বেশ কয়েকটি খাওয়ার হোটেল ও থাকার জন্য মোটামুটি ভালো মানের গেষ্ট হাউজ বা আবাসিক হোটেল রয়েছে। যার যার পছন্দ ও বাজেটের মধ্যে বাছাই করে থাকতে ও খেতে পারেন এসব হোটেল রেস্তোরায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়