শিরোনাম
◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি ◈ বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স: কীভাবে পাবেন, কী কী শর্ত মানতে হবে? ◈ এবার থাইল্যান্ড থেকে ভারতগামী বিমানে ১৬ টি সাপ, এরপর যা ঘটল ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনালাপ নিয়ে এবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্তা

প্রকাশিত : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৬:১৬ সকাল
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৬:১৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছয়মাসে কৃষিঋণের লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি ২৯ ব্যাংক

কালাম আঝাদ: চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি ২৯টি ব্যাংক। ৫৫টি ব্যাংকের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছেছে ৩টি ব্যাংক। বাদবাকি ২৩টি ব্যাংক লক্ষ্য পূরণে সমর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্যমতে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণে এবার অগ্রণী ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৮০ কোটি টাকা। ব্যাংকটি ছয়মাসে লক্ষ্যের কাছাকাছি ঋণ বিতরণে সমর্থ হয়েছে। গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অগ্রণী ব্যাংক কৃষি খাতে বিতরণ করেছে ৩৩৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অপর সাতটি ব্যাংকের মধ্যে সোনালী ও রূপালী ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃষিঋণ বিতরণে সমর্থ হয়নি। অন্য ব্যাংকগুলোর অবস্থা ভালো। এরমধ্যে ১৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বেসিক ব্যাংক বিতরণ করেছে ৮১ কোটি ৩ লাখ টাকা। বছরের লক্ষ্যমাত্রা ছয়মাসেই পূরণ করেছে বিডিবিএল (বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড)। ১৫ কোটি টাক লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বিডিবিএল ছয়মাসে বিতরণ করেছে ১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। পাঁচ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) বিতরণ করেছে ২ হাজার ৭৫৪ কোটি ১১ লাখ টাকা। ছয়মাসে জনতা ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণের পরিমাণ ৪৯৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ব্যাংকটিকে ৭৫০ কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল। এক হাজার ৬৮০ কোটি টাকা লক্ষ্যের মধ্যে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) বিতরণ করেছে এক হাজার ২৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।

বিদেশি খাতের নয়টি ব্যাংকের মধ্যে কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি তিনটি। ব্যাংক আল-ফালাহ্, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও ওরি ব্যাংক।

এ ধরনের ব্যাংকগুলোর মধ্যে ব্যাংক আল-ফালাহ্ লিমিটেডকে ১৮ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। ব্যাংকটি ছয়মাসে বিতরণ করেছে ২০ লাখ টাকা। ৩২ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সিটি ব্যাংক এনএ বিতরণ করেছে ২০ কোটি টাকা। কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের লক্ষ্য ছিল ৪৬ কোটি টাকা। বিতরণ করেছে ৫০ কোটি এক লাখ টাকা। ৮ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে হাবিব ব্যাংক লিমিটেড বিতরণ করেছে ৪৫ কোটি এক লাখ টাকা। এইচএসবিসি ব্যাংক বাংলাদেশের কৃষিঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪৪ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ১১৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানকে মাত্র এক কোটি টাকার কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। ব্যাংকটি ছয়মাসে এ খাতে এক টাকাও বিতরণ করেনি। বিদেশি খাতের আরও তিনটি ব্যাংকের মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেডের লক্ষ্য ছিল ৩০৯ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ১৭৬ কোটি টাকা। ১১ কোটি টাকা লক্ষ্যের মধ্যে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া বিতরণ করেছে ১৫ কোটি টাকা। আর ১২ কোটি টাকা লক্ষ্য নিয়ে এক টাকাও বিতরণ করতে পারেনি ওরি ব্যাংক।

বেসরকারি খাতের ৩৮টি ব্যাংকের মধ্যে এবি ব্যাংকের কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণে লক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল ৩শ কোটি টাকা। ব্যাংকটি ছয়মাসে লক্ষ্যের অর্ধেক বিতরণ করতে পারেনি। বিতরণ করেছে মাত্র ৫৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ৪৭২ কোটি টাকা লক্ষ্য নিয়ে আল-আরাফাহ্্ ইসলামী ব্যাংক বিতরণ করেছে মাত্র ১৭০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। লক্ষ্যের প্রায় কাছাকাছি বিতরণ করেছে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড। ৩০ কোটি টাকা লক্ষ্যের মধ্যে ব্যাংকটির বিতরণ ১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। ৩৪৪ কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডকে। ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ১৬০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ব্র্যাক ব্যাংককে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৩৩৯ কোটি টাকা। ব্যাংকটিও লক্ষ্য অনুযায়ী কৃষিঋণ বিতরণ করতে পারেনি। বিতরণ করেছে ১৪৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। ঢাকা ও ডাচ্্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডও লক্ষ্য অনুযায়ী কৃষিঋণ বিতরণ করতে পারেনি। ব্যাংক দুটির লক্ষ্য ছিল যথাক্রমে ২৯৭ কোটি ও ৩৭৬ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৭৫ কোটি ৩৯ লাখ ও ৭৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ৩২০ কোটি টাকা লক্ষ্য নিয়ে ইস্টার্ন ব্যাংক বিতরণ করেছে ৩১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ৪৬৪ কোটি টাকা লক্ষ্য নিয়ে এক্সিম ব্যাংক বিতরণ করেছে মাত্র ১৯৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭০ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিতরণ করেছে মাত্র ১৪৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা। তবে লক্ষ্য পূরণে সমর্থ হয়েছে আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড। ৩২৯ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ১৯৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণে লক্ষ্য পূরণে সমর্থ হয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। ব্যাংকটির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। বিতরণ করেছে ৭১১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ২৬৩ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে যমুনা ব্যাংক বিতরণ করেছে ১২৯ কোটি ৬ লাখ টাকা। ৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে মেঘনা ব্যাংক কৃষি ও পল্লীঋণ খাতে বিতরণ করেছে ১৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা। ব্যাংকটির ছয়মাসের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। মিডল্যান্ড ব্যাংক কৃষিঋণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সমর্থ হলেও ব্যর্থ হয়েছে মধুমতি ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড।

৫২ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে মিডল্যান্ড ব্যাংক বিতরণ করেছে ৪২ কোটি ৩ লাখ টাকা। খাতটিতে এক টাকাও বিতরণ করেনি মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৫৬ লাখ টাকা। ২৬৮ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের বিতরণ মাত্র ২৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২৪ কোটি টাকা। ব্যাংকটি কাটায় কাটায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে সমর্থ হয়েছে। ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ২১২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এনসিসি ব্যাংক লিমিটেডের কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮০ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিতরণ করেছে মাত্র ৫২ কোটি ১৭ লাখ টাকা। ৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এনআরবি (নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশিজ) ব্যাংক লিমিটেড বিতরণ করেছে ২৯ কোটি এক লাখ টাকা। এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭৭ কোটি টাকা। ব্যাংকটি ছয়মাসে বিতরণ করেছে ২৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। একইসঙ্গে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেডও কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। ১২৩ কোটি টাকা লক্ষ্য নিয়ে ব্যাংকটি বিতরণ করেছে মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ টাকা।

বেসরকারি খাতের অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩১৭ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ২২০ কোটি ৫ লাখ টাকা। ৩২৪ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড বিতরণ করেছে ২৫৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ৪২০ কোটি টাকা লক্ষ্যের মধ্যে পূবালী ব্যাংক লিমিটেড বিতরণ করেছে ২১১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। ৩০৩ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডকে। ব্যাংকটি বিতরণ করেছে মাত্র ২২ কোটি ১১ লাখ টাকা। সীমান্ত ব্যাংক লিমিটেডকে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৫ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিতরণ করেছে মাত্র এক লাখ টাকা।

৩৮০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড বিতরণ করেছে মাত্র ১৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড বিতরণ করেছে মাত্র ১৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। ব্যাংকটিকে লক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল ৮৬ কোটি টাকা। সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪২৮ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ১শ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ২২৮ কোটি টাকা লক্ষ্যের মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক বিতরণ করেছে ১৮৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেডকে কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্র দেওয়া হয়েছিল ৩৩০ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ৯২ কোটি ৪১ লাখ টাকা। ২৫১ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে দ্য প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড বিতরণ করেছে ১১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ব্যাংকটি তার লক্ষ্যমাত্রার প্রায় কাছাকাছি পৌঁছেছে। ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডকে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৩৫৪ কোটি টাকা। ব্যাংকটি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। বিতরণ করেছে মাত্র ১০২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। একইসঙ্গে ইউনিয়ন ব্যাংক ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডও কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। ২০২ কোটি টাকা লক্ষ্যের মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংক বিতরণ করেছে ৫৮ কোটি ২২ লাখ টাকা। আর ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের ৪৪৬ কোটি টাকা লক্ষ্যের মধ্যে বিতরণ ১৮০ কোটি ১২ লাখ টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বশেষ হিসেবে কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড। ১৮২ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ১০২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়