লিহান লিমা: নিজকে অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করা ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলিয় নেতা হুয়ান গুয়াইদোকে ‘অবৈধ’ বলে ঘোষণা করেছে দেশটির উচ্চ আদালত। এদিকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে আরও চাপে ফেলতে দেশটির সামরিক বাহিনীকে হাতে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আনাদুলু, ফরেইন পলেসি, ইন্ডিপেনডেন্ট, রয়টার্স
শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিচারক হুয়ান মেনজোদা বলেন, ‘গুয়েদোর অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্সি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তিনি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা জোরপূর্বক কবজা করতে চাইছেন। ইতোমধ্যেই আদালত তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞারোপ করেছে এবং তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। এদিকে মাদুরোর পক্ষ ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ভেনেজুয়েলার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। হোয়াইট হাউসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলছেন, ‘গুয়াইদো কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার সমর্থন পেয়েছেন। তবে নেতৃত্ব এখনও মাদুরোর পক্ষে। ওয়াশিংটনের প্রত্যাশা ভেনেজুয়েলা সেনাবাহিনীর সদস্যরা একে একে মাদুরোর পক্ষ ত্যাগ করবেন।’ এক সাক্ষাতকারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পেন্স ভেনেজুয়েলায় হিজবুল্লাহের প্রত্যক্ষ উপস্থিতি রয়েছে মন্তব্য করে বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বাস করে ভেনেজুয়েলায় লেবাননভিত্তিক গোষ্ঠি হিজবুল্লার সরাসরি শাখা রয়েছে। তেহরান থেকে যার অর্থায়ন এবং মদদ দেয়া হয়’। ফরেইন পলেসি জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, গুয়াইদো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটিতে হিজবুল্লাহের প্রভাব কমানোর বিষয়ে একমত হয়েছেন।
২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাদুরো দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেয়ার পর থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়। ২৩ জানুয়ারি নিজেকে ‘অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে ঘোষণা দেন গুয়াইদো। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ ইউরোপিয় দেশগুলো গুয়োইদো কে স্বীকৃতি দিয়েছে। যদিও দেশটির সেনাবাহিনী, রাশিয়া, চীনসহ কিছু দেশ এখনো মাদুরোর সঙ্গে রয়েছে। চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানের শান্তিপূর্ণ আলোচনার ওপর জোর দিয়েছে দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনাইং বলেন, চীন বিশ্বাস করে ভেনেজুয়েলার নাগরিকরাই এর সমাধান করবেন। দেশটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায় সংলাপ এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া।
ইতোমধ্যেই চলমান মার্কিন অবরোধ, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও খাবারস্বল্পতার কারণে সাধারণ নাগরিকরা পাশ্ববর্তী দেশে আশ্রয় নিচ্ছে। ভেনেজুয়েলায় চলতি সপ্তাহে প্রাণ হারিয়েছে ১৪টি শিশু। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম, খাবারস্বল্পতা, নিরাপদ পানীয় ও চিকিৎসাকর্মীর অভাবে মৃত্যু ঝুঁকিতে আছে আরো শতশত শিশু। মাদুরো ইতোমধ্যে মার্কিন ত্রাণবাহী একাধিক গাড়ির প্রবেশ আটকে দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা ভিক্ষুক নই। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক নিরাপত্তার জন্য যত ওষুধ লাগে তার সবগুলো দেশেই উৎপাদন করা হবে।’