স্মৃতি খানম : দীর্ঘদিন সিনেমা থেকে দূরে থাকার কারণ জানালেন অভিনেতা অনন্ত জলিল। তিনি বলেন, আমি ব্যবসা করি এটা সবাই জানেন। আমি সবসময় একটা কথা বলি, মহান আল্লাহ আমাকে সবকিছু দিয়েছেন, কিন্তু সময় দেননি। দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৬ ঘণ্টাই আমাকে ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। এ কারণেই ছবিতে মনোযোগ দিতে পারিনি। এদিকে আমার ভক্ত-দর্শকরা দীর্ঘদিন ধরে চাইছেন তাদের জন্য নতুন ছবি বানাই। তাই কিছুটা সময় বের করে নতুন ছবি ‘দিন : ‘দ্য ডে’র কাজ শুরু করলাম। সূত্র: যুগান্তর
‘দিন : দ্য ডে’ নামকরণটা কীভাবে করলেন? অনন্ত জলিল বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার যে দিন অতিবাহিত হয়, সেটাকেই আমি ছবির নাম দিয়েছি। নামটা এ কারণেই রেখেছি, ছোটবেলায় দেখেছিলাম ‘এসব দিনরাত্রি’। কখনও হাসি, কখনও কান্না- এ নিয়েই মানুষের জীবন। কিন্তু এখন দেখা যায়, মানুষের মৃতু্যুটাই কেমন যেন অসহায়ের মতো। মধ্যপ্রাচ্যের দিকে তাকালেই দেখা যায়, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোয় মানুষের জীবনের মূল্য এক পয়সাও নেই। পাখির মতো গুলি করে বোমা মেরে নির্বিচারে মানুষ মারছে। মানবিকতা নেই কারও মধ্যে। কতো ভয়ংকর দিন আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে, সেখান থেকেই ছবির নামকরণে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। মানুষের জীবনে এক একটি দিন কীভাবে কাটছে সেটাই আমার ছবিতে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। ছবিটি আমরা ইরানের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় করছি। এ বিষয়টিও সবাই জানেন। বাংলাদেশের বাইরে ইরান, তুরস্ক, আফগানিস্তান, লেবানন এসব দেশে শুটিং করার ইচ্ছা আছে। স্ক্রিপ্ট রেডি। আশা করছি ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে শুটিং শুরু করতে পারবো।
কলকাতার সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় এতোদিন ছবি নির্মাণের কথা শুনেছি, দেখেছি। কিন্তু সেখান থেকে বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রি লাভবান হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। হলেও কোনদিক থেকে কতোটা লাভবান হয়েছে সেটা আমার জানা নেই। সেক্ষেত্রে ইরানের সঙ্গে একই প্রশ্ন আসাটা অবান্তর। আমি যেহেতু একটু ভিন্ন ধরনের কাজ করতে পছন্দ করি, সে চিন্তা থেকেই ইরানের সঙ্গে প্রযোজনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাছাড়া আরও একটি কারণ আছে। ভারতের বাইরে সিনেমা দেখার জন্য মানুষের মধ্যে যে আগ্রহ সেখানে আরও দুটি দেশ এগিয়ে। সেটা হচ্ছে মিসর ও ইরান। মিসরে সিনেমা নির্মাণের জন্য আমরা সেরকম সুযোগ-সুবিধা পাইনি। চেষ্টা করেছিলাম। ইরানে পেয়েছি, তাই সিনেমা প্রযোজনার জন্য আমার কাছে ইরানকেই বেস্ট মনে হয়েছে।
ইরানে যাদের সঙ্গে আমি কাজ করছি তারা আমাকে নিয়ে তিন মাস স্টাডি করেছে। বাংলাদেশে আমার অবস্থান কী, আমি কী করি, আমার জনপ্রিয়তা কতটুকু, সোশ্যাল ওয়ার্ক করি কিনা, গরিবদের প্রতি কোনো দায়বোধ আছে কিনা- এসব কিছু জানার পর তারা আমার সঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছে। আমাকে সম্মানের সঙ্গে রিসিভ করেছে। শেষাবধি আমি বুঝতে পারলাম, তাদের সঙ্গে কাজ করে অন্তত শান্তি পাবো। কোনো পেইন থাকবে না। যেটা আগে ছবি বানাতে গিয়ে পেয়েছি।