সুজন কৈরী : রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ১ জনকে আটক করেছে র্যাব-১। তার নাম মো. সজীব হোসেন (২১)।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. সারওয়ার-বিন-কাশেম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১ এর দল জানতে পারে, খিলক্ষেত এলাকায় প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রের কয়েকজন সদস্য অবস্থান করছে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সক্রিয় সদস্য সজীবকে আটক করে। এ সময় তার কাছ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজে ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারে বিভিন্ন সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।
সজীবকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, সজীব গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম কলেজের বিবিএসের ১ম বর্ষের ছাত্র। পাশাপাশি স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেণীর ছাত্র/ছাত্রীদের প্রাইভেট/টিউশন পড়ান। এর আড়ালে গত ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ফেসবুক আইডির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু করে। ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে বিভিন্ন ছাত্র/ছাত্রীদের সঙ্গে মেসেজের মাধ্যমে প্রলোভন দেখালে অনেক সুযোগ সন্ধানী ছাত্র/ছাত্রীরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ফেসবুক মেসেঞ্জার, ইমো ও হোয়াটস্অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার ছাত্র/ছাত্রীদের কাছে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে মোটা অংকের টাকা আয় করে। তিনি অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে চলমান পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে সুযোগ সন্ধানী ছাত্র/ছাত্রীদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে তাদের প্রশ্ন সরবরাহ করার পর ফাঁসকৃত প্রশ্নগুলো সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে ডিলেট করে দিতেন। জিজ্ঞাসাবাদে সজীব আরো জানিয়েছেন, ফেসবুকে তার দেয়া পোষ্ট দেখে অনেক সুযোগ সন্ধানী শিক্ষার্থীরা প্রলোভনে পড়ে প্রশ্ন পাওয়ার আকাঙ্খায় বিকাশের মাধ্যমে তাকে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা পাঠাতো। এক্ষেত্রে সজীবের ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমোর বিভিন্ন লিংক/গ্রুপ থেকে প্রাপ্ত প্রশ্ন সরবরাহ করা হতো। আবার কখনো আগের বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কাটছাট করে, এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে নিজেই প্রশ্নপত্র তৈরি করে সরবরাহ করতেন। এভাবে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন সরবরাহ করে সজীর বিভিন্ন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বিকাশ ও বিভিন্ন পন্থায় মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা যায়। সজীবের দেওয়া তথ্য উপাত্ত যাচাই বাছাইয়ের ভিত্তিতে চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্য সদস্যদের আটকের চেষ্টা চলছে।