নূর মাজিদ : পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত দেশটির ক্ষমতার মূল নিয়ন্ত্রক সেনাবাহিনীকে বেসামরিক রাজনীতি এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বন্ধ করে, এসব থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই দেশটিতে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ শাসন কায়েম রয়েছে। এমনকি দেশটির গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ বেসামরিক রাজনীতির পালাবদলেও সামরিক প্রশাসন বা গোয়েন্দা সংস্থা প্রভাব রাখে। এই প্রেক্ষিতেই গতকাল বুধবার বিকেলে দেশটির আদালত এমন নির্দেশ দিলেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক কাজি ফয়েজ ইসা এবং মুশির আলমের একটি বিশেষ বেঞ্চ এই রায় দেন। ইয়ন, স্ক্রল ইন
২০১৭ সালের জাতীয় নির্বাচনে ফৈজাবাদ আসনে তেহরিক-ই- লাব্বাইক দলের সহিংসতা নিয়ে এক মামলার শুনানির শেষে আদালত সেনাবাহিনীর প্রতি এমন কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। তেহরিক-ই- লাব্বাইক দলটির পেছনে দেশটির সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে বলেই ধারনা করা হয়। গোঁড়া কট্টরপন্থী দলটি পাকিস্তান মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে তাদের পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফৈজাবাদ আসনে নির্বাচনী সহিংসতায় ৬ জন নিহত এবং আরো কয়েক শ মানুষ আহত হন।
এই মামলার শুনানি শেষে বুধবার আদালত প্রাদেশিক সরকারগুলোকে স্থানীয় পর্যায়ে উগ্রবাদ, বিদ্বেষ এবং সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে দিতে কাজ করে এমন চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে আরো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দেন। এসময় সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে আদালত বলেন, সেনাবাহিনীর কোন কর্মকর্তা যদি কোন ধরনের রাজনৈতিক এজেন্ডায় অংশগ্রহণ বা রাজনীতিতে প্রভাব খাটানোর চেষ্টায় জড়িত থাকেন তবে তিনি সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্বের অঙ্গীকার ভঙ্গ করছেন। যা দেশের জনগণের কাছে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন করে। বুধবার এই রায়ের অনুলিপি দেশটির সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে তেহরিক-ই- লাব্বাইক দলটির সেনা সমর্থিত আন্দোলনের কারণে তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকারের কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।