শিরোনাম
◈ ভারত–বাংলাদেশ নিরাপত্তা সংলাপ: দুই দিনের বৈঠকে ‘ইতিবাচক বার্তা’ ◈ পেশাগত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষেত্র নিরাপত্তায় বৈপ্লবিক অগ্রগতি—আইএলওর ১০টি মৌলিক দলিল অনুমোদন করলো বাংলাদেশ ◈ প্রবাসী ভোটারদের রেকর্ড সাড়া—পোস্টাল ভোট অ্যাপে কোরিয়া-জাপান এগিয়ে ◈ সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে সম্মতি খালেদা জিয়ার ◈ আজ সশস্ত্র বাহিনী দিবস ◈ চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে চুক্তির সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ ◈ শ্রীলঙ্কাকে ৬৭ রা‌নে হারা‌লো  জিম্বাবুয়ে  ◈ রায়ের পর হাসিনাকে ফেরত দেয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে ◈ রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি, চার মাসে এলো এক লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকা ◈ প্রবাসী ভোটারদের সতর্কতা: ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর না দিলে পোস্টাল ভোট বাতিল

প্রকাশিত : ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৫:০৮ সকাল
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৫:০৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে ছাত্রলীগের গ্রহণযোগ্যতা কেমন?

খন্দকার হাবীব আহসান

দীর্ঘ ২৮ বছরের স্থবিরতা শেষে, আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ- ডাকসু নির্বাচন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় ডাকসু একটি অন্যতম শক্তিশালী ক্ষেত্র, যেখানে ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল সকল ছাত্ররাজনৈতিক সংগঠনের ভ‚মিকা বিশ্লেষণের সুযোগ রয়েছে।
ডাকসু কেন্দ্রীক আলোচনায় সর্বাগ্রে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসেবে নিজ সংগঠনের অবস্থান বিশ্লেষণ এবং জবাবদিহিতার কাজটার প্রাধান্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে সুপ্ত কোনো প্রশ্ন, ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল অন্যান্য সংগঠনগুলোর অপপ্রচার সবকিছুরই আমাদের কাছে সুস্পষ্ট উত্তর রয়েছে। হল-এ অবস্থানের বিষয়ে ছাত্রদলের যে অভিযোগ রয়েছে তা হলো- হলে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে! সেক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকে যায় ছাত্রদলের রাজনীতি করে এমন শিক্ষার্থীদের আসলেই কোন বিশেষ কারণে, হলের বাইরে অবস্থান করে? তারা কি স্বেচ্ছায় হলে আবাসিক নয়, নাকি তাদের সংগঠনের কৌশলগত নির্দেশনার কারণে তারা হলে আবাসিক হতে বাধা রয়েছে। সর্বশেষ ৬ ফেব্রæয়ারি ২০১৬ সালে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিসহ বিভিন্ন হলের আহবায়ক কমিটি প্রকাশের সাথে সাথেই রাতের আঁধারে পদপ্রাপ্ত সকল নেতাই লোকচক্ষুর আড়ালে হল ত্যাগ করে। তাদের এই পলায়ন আমাদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের স্পষ্ট ধারণা দিয়েছিলো যে, তারা কোনো শুভ সৎ বা ইতিবাচক উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনীতি না করার কারণেই তাদের এই পলায়ন। এবং সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছেও কৌতুহলের কারন ছিলো যে,কোন বিন্দুমাত্র কটু কথা ছাত্রলীগ না বললেও কেনইবা ছাত্রদলের এই লুকোচুরি!যদিও ছাত্রদলের প্রকাশ করা সেই কমিটির অধিকাংশই ছিলো অছাত্র।যারা বর্তমানে বিভিন্ন চাকুরীতে থেকে এবং বৈবাহিক জীবনে থেকেও হলে সহাবস্থানের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে।
তথ্যমতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৩-১৪ সেশনের পরবর্তী কোনো সেশনেই ছাত্রদলের পদধারী কোনো নেতা নেই। এমনকি তেমন কেউ কর্মী পরিচয়েও হলে বা হলের বাইরে নেই। ২০১৩-১৪ সেশনের পূর্ববর্তী সকল সেশনের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন শেষ। তাহলে ছাত্রদল নেতারা আসলে কাদের সহবস্থান চায় তা আমাদের বোধগম্য নয়। এছাড়া অনান্য সকল প্রগতিশীল সংগঠনের নেতাকর্মীরা হলে অবস্থানসহ ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালাচ্ছে নিয়মিত।
তবে ডাকসুর ভোটার ও প্রার্থী হিসাবে নিয়মিত অনার্স, মাস্টার্স ও এমফিলে অধ্যায়নরত অনূর্ধ্ব ৩০ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক রাখার ব্যাপারে ভেবেছেন কিনা তা আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। কারণ প্রতি হলে তীব্র আবাসন সংকট উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য একাধিক বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা প্রমাণ করে না হলের শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দ্রæত সমাধানের পথে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের গণরুমে অবস্থানের কারণ অবশ্যই আবাসন সংকট, যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরাই তাগিদ দিয়ে আসছে নিয়মিত। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের মানসম্মত আবাসন ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে বরং হলে অবস্থানরত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাই সর্বোচ্চ আন্তরিক মানবিক ও ভ্রাতৃত্বসুলভ আচরণ করে সর্বদাই। যেই আন্তরিকতা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে অবস্থানরত আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি মধুর সম্পর্কের বড় কারন। এছাড়া ২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে হলে যে নৈরাজ্যগুলো চলতো সেগুলোর মুখরোচক ভীতিকর গল্পগুলোর বাস্তবতা এখন না থাকলেও গুজব হিসেবে বর্তমানের ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে চক্রান্তকারী একটি মহল এবং যার দায়ভার দেয় ছাত্রলীগের ওপর। অথচ বর্তমান সময়ে হলে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের মধ্যে একটি মধুর সম্পর্ক রয়েছে।
হলের গেস্টরুম নিয়েও অনেক মিথ্যাচার, অনেক বানানো গল্প আমাদেরকে কখনো অবাক করে কখনো বিভ্রান্ত করে। অথচ গেস্টরুম নিয়ে আমার যে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা রয়েছে দীর্ঘদিনের তার প্রেক্ষিতেই বলতে পারি গেস্টরুমে হলের জুনিয়র সিনিয়র শিক্ষার্থীদের যে পরিচিতি সভা হয়ে থাকে তা অনেকটা পারিবারিক আলাপচারিতার আবহে, এখানে যে কোনো প্রকার নির্যাতনের অভিযোগ সম্পূর্ণ গুজব, যে গুজবে ভর করে দীর্ঘদিন ধরে বাম ছাত্রারজনৈতিক সংগঠনগুলো তাদের অতি আলাপ চলমান রেখেছে। বরং এই গেস্টরুম পরিচিতি সভার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র-জুনিয়রদের সাথে একটি ভ্রাতৃত্ব মূলক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অন্যদিকে হলে ঘটে যাওয়া যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাকে গেস্টরুম নির্যাতনে ছাত্রলীগকে দোষারোপ করার চেষ্টা করে যায় চক্রান্তকারী কয়েকটি পক্ষ।
অথচ বিগত এক দশকে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে সর্বদাই সচেষ্ট ছিলো।ভর্তি পরীক্ষার সময় তথ্যকেন্দ্র স্থাপন থেকে শুরু করে নান সহযোগিতা এবং হলে হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে আবাসিক শিক্ষক ও প্রাধ্যক্ষ মহোদয়ের সাথে মতবিনিময় করেছে ছাত্রলীগ,চেষ্টা করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের,খাবারের মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে কথা বলেছে ক্যান্টিন ও মেস মালিকদের সাথে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শান্তিপ্রিয় মানবিক এবং ইতিবাচক কাজের উৎসাহদাতা সংগঠন, যে কোনো শিক্ষার্থীর যুক্তিসংগত সমস্যা সমাধান করতে, ইতিবাচক কাজের প্রেরণা শক্তি হিসেবে এগিয়ে চলছে সংগঠনটি। কোনো গুজব বিশ্বাস করে নয় বরং একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হয়ে যেকোনো ইতিবাচক কাজের প্রয়োজনে আসুন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আপনার পাশে থাকবে নিশ্চয়। আমরা তরুণ প্রজন্মের সকলে মিলে একটি অসা¤প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের চেতনা নির্ভর আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে কাজ করতে চাই একসাথে। আমাদের এই পথচলায় ডাকসু নির্বাচন দিচ্ছে নতুন মাত্রা, যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে নিজ সংগঠনের নেতা কর্মীদের ভুলত্রæটি শুধরে আরও এগিয়ে যাবে ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে আমরা প্রতিশ্রæতিবদ্ধ।
লেখক : সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাস টাইমস অনলাইন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়