হ্যাপি আক্তার : পৃথিবীতে কোনো মৌমাছি না থাকলে মানব সভ্যতা টিকে থাকা অসম্বব হয়ে উঠবে। সমস্যাটি হলো বিশ্বের ১’শ রকমের রকমের ফল আর ৯০ ভাগ খাদ্য শস্যের পরাগায়ন হয় মৌমাছির সাহায্যে। মৌমাছি না থাকলে কমে যাবে ফসল কিংবা ফলের উৎপাদন। দেখা দেবে খাদ্য সংকট। প্রশ্ন হলো পৃথিবী কি সে দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে? কারণ ১ দশক আগেও বিশ্বজুড়ে যে পরিমাণ মৌমাছি ছিলো, এখন আছে তার মাত্র দুই তৃতীয়াংশ।
বিজ্ঞানরা বলছে পৃথিবী থেকে যদি মৌমাছি হারিয়ে যায়, তাহলে মানব সভ্যতা টিকবে মাত্র ৪ বছর। তার মানে মৌমাছি ছাড়া খুব বেশি টিকে থাকার সময় পাবে না মানুষ। কী হবে যদি সত্যি সত্যি মৌমাছি হারিয়ে যায়?
বিশ্বের ৯০ ভাগ মূল ফসলের পরাগায়ন হয় মৌমাছির মাধ্যমে। মৌমাছি যদি পরাগায়নে সাহায্য না করে তাহলে বাঁচবে না ফসল। মানুষের প্রতি ৩ লোকমা খাবারের মাধ্যে ১ লোকমাই আসে মৌমাছির কারণে। সারা বিশ্বের ৯০ ভাগ আর যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ ভাগ খাদ্য দ্রব্যের পেছনে রয়েছে মৌমাছির অবলম্বন।
কিন্তু সমস্যা হলো মৌমাছি মারাত্মকভাবে কমে যাচ্ছে। গত এক দশকে মৌমাছির এক তৃতীয়াংশ বিলুপ্ত হয়েছে। আর বিলুপ্তির পথে রয়েছে ইউরোপের ২৪ ভাগ মৌমাছি। কিন্তু প্রশ্ন হলো কেন বিলুপ্ত হচ্ছে মৌমাছি? এর অবশ্য বহু কারণ হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযুগ্য বিষয় হলো, কীটনাশন, খড়া, বাসস্থান হারানো, খাদ্যের অভাব, বায়ু দুষণ, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিসহ আরো অনেক কারণ রয়েছে। এক কথায় সম্পূর্ণটাই হলো মানব সৃষ্ট কারণ।
বড় বড় কীটনাশক কোম্পানিগুলো, কীটনাশন ও আগাছা নিধনকারী ওষুধ বানাচ্ছে ফসলকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে। যার মধ্যে রয়েছে নিওনিক্স , যা মৌমাছিদের মেরে ফেলে। অর্থাৎ কীটনাশকের হাত থেকে ফসলকে রক্ষা করতে নয় বরং ধ্বংশের পথে ঠেলে দিচ্ছে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিওনিক্স সমৃদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। মৌমাছির ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতেও কাজ করছে। কিন্তু ঐ একই উপাদান পাওয়া যাচ্ছে বাগানে ব্যবহৃত কীটনাশকেও। তাই কীটনাশক ক্রয় করার আগে এই উপাদান আছে কী না ক্ষতিয়ে দেখতে হবে। সূত্র: সময় টিভি