‘নুরজান’
হালিমা রিমা
মাত্তাব্বরের পোলা আমি
এককথার মানুষ,
করমু বিয়া তরে আমি
উড়াইয়া ফানুস ।
সাতনড়ি হার গড়ায় দিমু আরও
দিমু বিছা,
নাকের নোলক , হাতের চুড়ি
সাথে রঙ্গিন ফিতা।
লাল টুকটুক শাড়ি পাবি
আরও পাবি ঘর
, বাধা দিস না করতে না হয়
আর একটু বেশী আদর!!
লজ্জা কিসের ?
ভয় পাইস না।
আইজও আছি, কাইলও থাকমু।
তোরে ছাইড়া কোথাও যামুনা।
নুরজানের স্বপ্ন বাড়ে
সাথে বাড়ে পেট।
ঘড় হইবো, সংসার হইবো
সুখের জীবন নিরেট।
তিন মাস গেল চাইরে পড়ল
কবে করবেন বিয়া?
সবুর কর, ধইজ্জ ধর,
ব্যস্ত বাপজানে্র ইলেকশন নিয়া।
বৈশাখ গেল জ্যৈষ্ঠ আইল, আর যে লুকান যায় না।
আফনের পায়ে ধরি মিনতি করি,
আর দেরী করন যে যায় না।।
ধইজ্জ ধর!!!!
সোহাগ কালে কথা কইস না
এত!!!
যা.... শ্রাবনে করমু বিয়া।।
আমার মোড খারাপ করবি আর
কত!!!
শ্রাবণ আইলো ... বর্ষা নামলো
মাঠ ডুবলো,খাল ডুবলো।
সাথে ডুবলো বাড়ী।
নুরজানের স্বপ্ন ডুবলো
সাত মাসের পুয়াতি হইলো!
পড়লো মাথায় বাড়ি।।
শালিস বসলো
মাতাব্বর আইলো।
ইমাম সাব আইলো।
গেরামের সব মানুষ আইলো।
মাতাব্বরের পোলাও আইলো।
নুরজানের বিচার হইলো।
জেনা করার শাস্তি পাইলো !!
পিঠে ১০০ ঘা বেত।
মাথা মুড়াইয়া ঘোল।
পিন্দনের শাড়ি ছিঁড়লো
সায়া ছিঁড়লো ব্যালাউজ ছিঁড়লো।
সারা গা দিয়া রক্ত ঝড়লো ।।
মাতাব্বরের পোলার বিচার!!
সে আবার কি?
পুরুষ পোলা।
এমন হবেই মেলা!
নুরজান কেন আইলো!?
নুরজানের গায়ে সব্বাই
থু থু দিলো!!!
ইমাম সাবের দয়ার শরীর..
উচিত এক খান বিধান দিলো।
সালিশ শেষে নুরজান দুই হাজার
ট্যাহা পাইলো!!
মায়ে বকে, ভাইয়ে মারে,
তার স্বপ্নের সংসার গেল।
বাপে দিলো দরজায় খিল।
নদীর জলে নূরজান জীবন দিলো।।
ভাইয়ে বাঁচল, বাপে বাঁচল।
গেরামের আপদ বিদায় হইলো।
গেরামে আবার বাইদ্য বাজলো
মাতাব্বরের পোলার বিয়া
হইলো!!!
টেলিভিশন পাইলো,
ফ্রিজ, সাইকেল পাইলো।
গেরামের মাইসষে্র বাহবাও
পাইলো!!