মাসুদ রানা লন্ডন, ইংল্যান্ড : ভারতের আদালত অদ্য পরকীয়াকে ডিক্রিমিনালাইজ করেছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। স্বভাবতঃ অনেকের মনে হতে পারে ‘পরকীয়ায় তা হলে কোনো সমস্যা নেই!
এ-প্রসঙ্গে আমাদের বিবেচ্য হচ্ছে দুটি বিষয় – অন্যায় ও অপরাধ। অন্যায় ও অপরাধের মধ্যে পার্থক্য আছে।
যা অন্যায় তা অপরাধ হতে পারে কিংবা নাও হতে পারে। আবার, যা অপরাধ, তা অন্যায় হতে পারে, কিংবা নাও হতে পারে।
তাহলে, অপরাধ ও অন্যায় শব্দ দুটোর অর্থ কী? কীভাবে আমরা বুঝবো কোনটি অন্যায়, আর কোনটি অপরাধ?
অন্যায় হচ্ছে তা, যা নৈতিকতার পরিপন্থী। আর, অপরাধ হচ্ছে তা, যা আইনের পরিপন্থী। নৈতিকতা হচ্ছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় আচরণ বিধি। আর আইন হচ্ছে রাষ্ট্রিক।
অপরাধ হচ্ছে আইনের দ্বারা নিষিদ্ধ আচরণ, যার সংঘটন কিংবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংঘটন প্রচেষ্টা রাষ্ট্রীয় বিচারালয়ে বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে যৌক্তিক সন্দেহের অতীত প্রমাণিত হলে শাস্তিযোগ্য।
অন্যায় হচ্ছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নৈতিকতার বিপরীত আচরণ, যার সংঘটন সমাজ, সংস্কৃতি ও ধর্ম কর্তৃক অননুমোদিত হলেও, ইহজগতে শাস্তিযোগ্য নয়।
আদর্শবাদী কিংবা ধর্মরাষ্ট্রে অন্যায় ও অপরাধ তত্ত্বগতভাবে এক ও অভিন্ন। কিন্তু সেক্যুলার সিভিল রাষ্ট্রে অন্যায় ও অপরাধ এক ও অভিন্ন হওয়া জরূরি নয়।
ধর্মরাষ্ট্রে পরকীয়া একই সাথে অন্যায় ও অপরাধ (যদিও লিঙ্গভেদে এই অপরাধে তারতম্য হতে পারে)। কিন্তু সেক্যুলার সিভিল রাষ্ট্রে পরকীয়া অন্যায় হিসেবে বিবেচিত হলেও অপরাধ হিসেবে বিবেচিত নয়।
[ লেখাটি লেখকের ফেসবুক থেকে নেয়া।]