ডেস্ক রিপোর্ট : জার্মানিতে ক্যাথলিক চার্চের অভ্যন্তরে যৌন নিপীড়নের তিন হাজার ৬৭৭টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১৯৪৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।
বুধবার দেশটির দুই শীর্ষ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে ভয়াবহ এই তথ্য ওঠে আসে।
স্পিগেল অনলাইন এবং ডাই সিত জানায়, জার্মান বিশপ কনফারেন্স কর্তৃক গঠিত কমিশন এবং তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে অর্ধেকেরও বেশি ভিকটিম হচ্ছে ১৩ বছর বয়সী, যার মধ্যে অধিকাংশই বালক। প্রতি ছয়টি নিপীড়নের ক্ষেত্রে একটি করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
চার্চের এসব ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল কমপক্ষে এক হাজার ৬৭০ জন যাজক। নিপীড়নের শিকার হওয়াদের মধ্যে আছে সেবক হিসেবে কাজ করা ৯৬৯ জন বালকও।
তবে গিজেস, হাইডেলবার্গ ও ম্যানহাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রকৃত ভিকটিমের সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
জার্মান বিশপ কনফারেন্স এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন মন্তব্য করেনি। তবে শিগগিরই তাদের প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে জানিয়েছে।
ডাই সিত তাদের প্রতিবেদনে আরও জানায়, তারা চার্চে সংরক্ষিত মূল নথিপত্র দেখার অনুমতি পায়নি। তবে বিশপের কাছে পাঠানো প্রশ্নের উত্তর থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য তারা পেয়েছে।
গবেষকদের মতে, তথ্য-প্রমাণযুক্ত কিছু ফাইলপত্র ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে যার কারণে অনেক ঘটনায়ই তদন্তে আনা সম্ভব হয়নি। অনেক অভিযুক্ত যাজকই তাদের অতীত জীবন সম্পর্কে তথ্য নথিভুক্ত না করেই অন্য বিশপের এলাকায় চলে গিয়েছিলেন।
গত ২০১০ সালে কয়েক দশক ধরে চলা জার্মানির চার্চে যৌন নিপীড়নের অভিযোগসমূহ বার্লিনের জেসুত স্কুলের প্রধানদের দ্বারা খারিজ করে দেয়। পরবর্তীতে কিছু ভিকটিম প্রকাশ্যে মুখ খোলায় পুরো দেশে আবার আলোচনায় ওঠে বিষয়টি।
প্রসঙ্গত, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রেও যাজকদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। এক হাজারও বেশি শিশুকে যৌন নিপীড়ন করে ৩০০ ক্যাথলিক যাজক। এমন ঘটনা প্রকাশ্যে এলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এতে আলোচিত মার্কিন কার্ডিনাল থিওডর ম্যাককারিক যৌন নির্যাতনের দায়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। কিন্তু পোপ ফ্রান্সিস ব্যক্তিগতভাবে ম্যাককারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ অবহেলা করেছেন বলে দাবি করেছেন আর্চবিশপ কার্লো মারিয়া ভিগানো।
শিশুদের যৌন নির্যাতন করার অভিযোগে ইতোমধ্যে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে খৃষ্টান ক্যাথলিক চার্চ। গত মাসের শেষের দিকে ক্যাথলিক ধর্মীয় নেতা পোপ ফ্রান্সিস আয়ারল্যান্ড সফরে গিয়ে এই কেলেঙ্কারির জন্য ‘ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা ভিক্ষা’ও করেন।
সূত্র : পরিবর্তন
আপনার মতামত লিখুন :