রিকু আমির : দৃক গ্যালারী মুক্তিযুদ্ধের যেসব ছবি বিক্রি করে, সেসবের স্বত্বক্রয় করা সংশ্লিষ্ট ফটোগ্রাফারের কাছ থেকে এবং চুক্তি আছে। এ বিষয়ে লিখিত কাগজপত্রও আছে।
গ্যালারির টিম লিডার ও ফটো এডিটর মো. মাঈন উদ্দিন এ প্রতিবেদকের প্রশ্নে বলেন, একজন ফটোগ্রাফারের ছবি তো শুধু আমরা কেন, কেউ-ই সেই ফটোগ্রাফারের অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করতে পারেন না। এটা আইনের দৃষ্টিতেও অপরাধ।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ফেসবুকের মাধ্যমে উস্কানি প্রদানের অভিযোগে দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহীদুল আলম বর্তমানে রিমান্ডে। তার বংশধর মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের বিরুদ্ধে ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর সূত্র ধরে প্রশ্ন উঠেছে- দেশ বিরোধী বংশীয় ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান দেশের স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ছবি বিক্রয়ের নীতিগত দিক নিয়ে।
১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত কয়েক হাজার ছবির আসল কপি (র কপি) আছে দৃক গ্যালারির কাছে। এসবের প্রায় সবই প্রয়াত ফটোগ্রাফার রশীদ তালুকদারের তোলা। মো. মাঈন উদ্দিন এ প্রতিবেদকের প্রশ্নে বলেন, মৃত্যুর পূর্বে রশিদ তালুকদার আমাদের কাছে সমস্ত ছবির স্বত্ব দিয়ে যান।
তিনি বুঝতে পেরেছিলেন- ছবিগুলো আমরাই সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে পারব। তার পরিবারের সাথে আজও আমাদের যোগাযোগ আছে। তার ছবি যদি আমাদের কাছ থেকে কেউ কিনে নেয় বা কোথাও তার ছবি প্রদর্শনী করা হলে, সেখান থেকে আয়ের একটি অংশ চুক্তি অনুযায়ী তার পরিবারকে দেয়া হয়। এটা খুব স্বচ্ছতার সাথে, খোলামেলাভাবে করা হয়।
রশিদ তালুকদারের যেসব ছবি রয়েছে দৃকের সংগ্রহে, এর মধ্যে বাছাই করে নিশ্চিত হয়েছে দৃক, প্রায় ২০০০ ছবি হবে শুধুমাত্র মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রীক। ‘যেহেতু মুক্তিযুদ্ধের ছবি, সেহেতু এসব ছবি বিক্রয়ে রাষ্ট্রীয় কোনো অনুমোদন বা এ জাতীয় বিষয় মানতে হয় কি-না’- এমন প্রশ্ন করা হলে গ্যালারির টিম লিডার ও ফটো এডিটর মো. মাঈন উদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা তো সংশ্লিষ্ট ফটোগ্রাফারের কাছ থেকে স্বত্ব ক্রয়-ই করে নিয়েছি, লিখিত দলিলও আছে।
মুক্তিযুদ্ধের ছবি বিক্রি করে দৃক যা আয় করছে, তার একটি অংশ সংশ্লিষ্ট ফটোগ্রাফার বা তার পরিবার পাচ্ছে, সরকারকে কর দিচ্ছি আমরা। দেশের প্রচলিত আইন-কানুন মেনে এসব কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। এমনকি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরেও রশীদ তালুকদারের তোলা কিছু ছবি আছে, যা আমাদের কাছ থেকে ক্রয় করা।