মতিনুজ্জামান মিটু : বিশেষজ্ঞ দলের মূল্যায়ন শেষ হয়েছে, অচিরেই ছাড় পাবে নাবি জাতের মজাদার আম গৌড়মতি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের পূর্ব নাম গৌড়, আর মুক্তার মতো দামি, এই দু’য়ে মিলে হয়তো এর নাম হয়েছে গৌড়মতি। ব্রান্ডের ল্যাংড়ার মতো দেখতে সুস্বাদু এই গৌড়মতি আম পাকে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে, থাকে সেপ্টেম্বর জুড়ে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. মো. শরফ উদ্দিন এবং তার দল ২০১৪ সাল থেকে গবেষণা চালিয়ে আমের এই জাতটির গুণামান সম্পর্কে নিশ্চিত হন। ২০১৮ সালের মে মাসে বিশেষজ্ঞ দলের মূল্যায়নে আমের এই জাতটিকে সম্ভাবনাময় এবং বানিজ্যিকভাবে লাভজনক বলে উল্লেখ করা হয়।
কৃষিবিদ ড. মো. শরফ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে আমের রতœ গর্ভা শিবগঞ্জের জাহাঙ্গির নামের এক ইজারাধারির বাগানে গৌড়মতি আমের দেখা মেলে। এসময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অভাবনীয় এই নতুন আমের জাতটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের পরিচয় করিয়ে দেয়। ইতোমধ্যে বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যদের মূল্যায়ণ শেষ হয়েছে। তারা জাতটিকে সম্ভাবনাময় এবং লাভজনক বলে সুপারিশ করেছেন। এটি যখন পাকবে তখন বাজারে একমাত্র আশ্বিণা ছাড়া অন্য কোনো আম থাকবেনা। এ সময় এক কেজি গৌড়মতি আম বিক্রি হবে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। এ কারণে গৌড়মতি আমের বিষয়ে চাষিদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। কলমের চারা বানিয়ে নতুন এই আমের জাতের সম্প্রসারণের প্রস্তুতি চলছে। চাপাইনবাবগঞ্জের কল্যাণপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার সেন্টারে মাতৃগাছ থেকে এই আমের জাতের এক হাজার চারা তৈরী করা হয়েছে। দেশের অন্যান্য হর্টিকালচার সেন্টার এবং ব্যক্তি পর্যায়েও কিছু কিছু গৌড়মতির মাতৃগাছ ও চারা রয়েছে। আরও পরীক্ষা-নিরিক্ষা চলছে। অচিরেই বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) গুণবতি এই গৌড়মতি আমের জাতটিকে কৃষক পর্যায়ে চাষের জন্য ছাড় বা মুক্তায়ন বা অবমুক্ত করতে পারে।
পুরস্কারপ্রাপ্ত ফল চাষি নাটোরের সেলিম রেজা বলেন, ল্যাংড়ার আকারের গৌড়মতি অত্যন্ত মজাদার আম। আমার খামারে এই জাতের ৪৫০টি মাতৃগাছ রয়েছে। এই মাতৃগাছ থেকে চলতি বছরে আমি ২৫ হাজার চারা তৈরী করেছি। এবছর প্রতিটি গৌড়মতির চারা ২০০ টাকায় বিক্রি করছি। আগামী বছরে এখান থেকে প্রতিটি গৌড়মতির চারা ৪০০ টাকা করে বিক্রি হবে।