মহিব্বুল হাসান: বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী মহানায়ক বুলবুল আহমেদ। ঢাকাই সিনেমার ইন্ড্রাস্ট্রিতে মহানয়কের উপাধি নিয়ে তিনি আজও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের অন্তরে অমর হয়ে আছেন।
আজ এই মহানায়কের পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার দিন। ২০১০ সালে ১৫ জুলাই সবাইকে কাঁদিয়ে তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। তার চলে যাওয়ার আট বছর। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে দিনটি বিশেষভাবে উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে তার পরিবার।
বুলবুল আহমেদের মেয়ে ঐন্দ্রিলা বলেন, ‘বাবা সবসময় আসহায়, বঞ্চিত মানুষের জন্য ভাবতেন। তিনি তাদের জন্য কাঁদতেন। আমি বাবার মতো মানুষ অনেক কম দেখেছি। আজ বাবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার মতো করে কিছু মানুষকে খাওয়াবো। তার জন্য দোয়া করে নেব। আল্লাহ যেনো আব্বুকে বেহেস্ত নসীব করেন।'
আক্ষেপের সুরে বলেন, কিংবদন্তী এই অভিনেতার মৃত্যুবার্ষিকীতে তার কর্মস্থলে নেই কোনও আয়োজন। টেলিভিশন জগতও থাকে নীরব। নেই কোনও আয়োজনের খবর।
বুলবুল আহমেদ ১৯৪১ সালে পুরান ঢাকাই জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম তাবারক আহমেদ। আদর করে তার মা-বাবা বুলবুল বলে ডাকতেন। দাম্পত্য জীবনে বুলবুল আহমেদের স্ত্রী ডেইজি আহমেদ। এই দম্পতির তিন সন্তান হলেন- মেয়ে ঐন্দ্রিলা ও তিলোত্তমা এবং ছেলে শুভ। দারুণ মেধাবী ছিলেন বুলবুল। পড়াশোনা করেছেন ঢাকার কলেজিয়েট স্কুল, নটর ডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশোনা শেষ করার পর তৎকালীন ইউবিএল ব্যাংক টিএসসি শাখার ম্যানেজার হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করেন তিনি।
চাকরির পাশাপাশি অভিনয় করতেন তিনি। বুলবুল আহমেদ অভিনীত প্রথম টিভি নাটক ছিলো আবদুল্লাহ আল মামুনের পরিচালনায় ‘বরফ গলা নদী’। এটি ১৯৬৪ সালে বিটিভিতে প্রচারিত হয়।
১৯৭৩ সালে আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমামের (ইউসুফ জহির) ‘ইয়ে করে বিয়ে’র মাধ্যমে প্রথম সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন। এর পরের বছর আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘অঙ্গীকার’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। ঢাকাই সিনেমায় এই দুটি ছবি দিয়ে বাজিমাত করেন তিনি। এরপর শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি দুই চরিত্র ‘শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’- এ দুর্দান্ত রূপদান করে। ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’-এই দুটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সকল শ্রেণীর দর্শকের মধ্যে জায়গা করে নেন তিনি।
এছাড়াও এই 'মহানায়' 'সুর্য কন্যা' 'সীমানা পেরিয়ে' ছবিগুলো বুলবুল আহমেদকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যায়। বুলবুল আহমদের শেষ চলচ্চিত্র 'দুই নয়নের আলো'
চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি সফল পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠিতও করেছেন নিজেকে। তার পরিচালনায় নির্মিত হয় ওয়াদা, মহানায়ক, ভালো মানুষ, রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত, আকর্ষণ, গরম হাওয়া, কত যে আপন প্রভৃতি সিনেমার সফল নির্মাতা ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :