শিরোনাম
◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ অহেতুক চাপ সৃষ্টি করতে জামায়াতের কর্মসূচি: মির্জা ফখরুল ◈ জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সাত দল ◈ স্ত্রী আসলেই নারী কি না প্রমাণ দেবেন ম্যাখোঁ ◈ আগামী বছরের বইমেলার সময় পরিবর্তন ◈ সৌদি-পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি, যা জানালো ভারত ◈ সরকারি কর্মচারীদের জন্য বড় সুখবর: অবসরে বাড়ছে সুযোগ-সুবিধা, কমছে অপেক্ষাকাল ◈ আগামীকাল ৮ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় ◈ সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় যমুনা টিভির সাংবাদিকসহ আহত ৫ ◈ ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় রাজনৈতিক মতভিন্নতার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে: প্রেস সচিব

প্রকাশিত : ২৬ জুন, ২০১৮, ১০:৫৪ দুপুর
আপডেট : ২৬ জুন, ২০১৮, ১০:৫৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পাহাড়ে ভূমিধস মোকাবেলায় ৩৫ সুপারিশ

রিয়াজ হোসেন : পাহাড়ে ধস মোকাবেলায় পাহাড় রক্ষায় একটি কমিটি গঠনসহ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ৩৫টি সুপারিশ করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

সুপারিশে পাহাড়ের দুই পাশে কোনো বসতি তৈরির অনুমতি না দেওয়া, অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়া এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড়গুলোকে খাস জমির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে তিন পার্বত্য জেলায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের অন্তর্ভুক্ত করে কৃষিভিত্তিক বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি পাহাড়ের মানুষগুলোর চাষাবাদ ও জীবিকা নির্বাহের ধরন পাল্টানোর পরামর্শ দিয়ে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ-সাত বছর পাহাড় থেকে সব ধরনের কাঠ সংগ্রহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে। বিকল্প জীবিকা হিসেবে কাপ্তাই লেকে পরিকল্পিতভাবে খাঁচায় ও বিভিন্ন আধুনিক মৎস্য চাষের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনের রাঙামাটিতে ধসে পড়া কিছু পাহাড় কেটে সমান করে শহর তৈরি, কাপ্তাই লেকে ভাসমান বসতি স্থাপন, দেশ-বিদেশ থেকে বীজ এনে হেলিকপ্টার থেকে পাহাড়ে ছিটিয়ে পুনর্বনায়ন এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য রাঙামাটি শহর ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে নতুন করে শহর তৈরির কথা বলা হয়েছে।

পাহাড়ধসের কারণ অনুসন্ধান ও করণীয় ২০১৭ শীর্ষক এই প্রতিবেদন চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে পাহাড়ধসের জন্য চারটি মানুষের সৃষ্টি এবং দুটি প্রাকৃতিক কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। পাহাড় রক্ষায় আগাম পূর্বাভাস, স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন, উদ্ধার যন্ত্রপাতি ক্রয় কথা বলা হয়েছে।

২০০৭ সালের ১১ জুন চট্টগ্রাম শহরে ৭টি স্থানে পাহাড় ও ভূমিধস হয়েছে অতিবর্ষণের কারণে। সে সময় পাহাড় ব্যবস্থাপনার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সুপারিশ সরকার গ্রহণ করে। সে সময় পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সুপারিশ সম্বলিত প্রস্তাব দেশের প্রত্যেক জেলায় পাঠানো হয়। পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি ৩৫টি সুপারিশে বলা হয়, সুষ্ঠু পাহাড় ব্যবস্থাপনার জন্য পার্শ্ববর্তী ভারত, নেপাল, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও চীনের অভিজ্ঞতাকে ভিত্তি করে জাতীয় পাহাড় ব্যবস্থাপনা নীতিমালা করা যেতে পারে। পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সুপারিশে বলা হয়, পাহাড় ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা ও পাহাড় ব্যবহারে অসর্তকতা পাহাড় ধসের অন্যতম প্রধান কারন।। পার্বত্য চট্টগ্রামে ধসের জন্য ২৮টি পাহাড়কে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে সেখানে অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণ ও বসতি বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যব্রত সাহার নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের একটি কমিটি প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

সত্যব্রত সাহা বলেন, দীর্ঘ মেয়াদে পাহাড়ধস বন্ধে আমাদের সুপারিশগুলো আমলে নিতে হবে। এর বাইরে খুব বেশি উপায় নেই। আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি তা গ্রহণ করলে আমরা এ ব্যাপারে দ্রুত কাজ শুরু করব।

প্রতিবেদনে ভূমিধসের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে রাঙামাটি শহরের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা তৈরির পরামর্শ দেওয়া হয়। ধসে পড়া পাহাড়গুলোর মধ্য থেকে বাছাইকৃত কিছু পাহাড়কে বিসর্জন দিয়ে সমতল উঁচু ভূমি তৈরি করে কয়েকটি স্যাটেলাইট শহর তৈরি করার কথাও বলা হয় প্রতিবেদনে। এ ছাড়া ৭২৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের কাপ্তাই লেকে পরিকল্পিত ও দৃষ্টিনন্দন ভাসমান বসতি গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের জুনে পাহাড়ধসে ১৬৮ জনের মৃত্যু ও প্রায় ৪০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি করে। এর আগে ২০০৭ ও ২০০৯ সালের পাহাড়ধসের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশও বাস্তবায়িত হয়নি। এ বছরের ১১ জুন রাঙামাটিতে আবার পাহাড়ধসে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়