ডেস্ক রিপোর্ট: হাতকাটা ইদুর আসল নাম ইদু মিয়া। অপরাধ জগতে তিনি ইদু মামা। বাস করেন চট্টগ্রামের এনায়েত বাজার বয়লার কলোনিতে, পরিবার নিয়ে। তবে সেই পরিবারের অধিকাংশ সদস্য চোর কিংবা ছিনতাইকারী। বেতন দেন তিনি তাদের। আমোদ-ফূর্তিরও ব্যবস্থা করেছেন বাসায়। সপ্তাহে একদিন নগরের দর্শনীয় স্থানে বেড়াতেও নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। গণধোলাইয়ের শিকার হলে করানো হয় চিকিৎসাও। বিনিময়ে নগরজুড়ে ছিনতাই ও চুরি করে বেড়ায় তার এই পোষা চোর ও ছিনতাইকারীরা। ছিনতাইয়ের যাবতীয় জিনিস এনে তুলে দেয় তার হাতে।
গতকাল সোমবার নগরের আগ্রাবাদ থেকে তিন সহযোগীসহ ইদু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। গ্রেফতার চারজন হলো- বরিশাল জেলার গৌরনদী থানার আগুরপুর গ্রামের মো. ইউনুছ মিয়ার ছেলে মো. ইদু মিয়া, কক্সবাজার জেলার রামু থানার রামপাড়ার মানিক সেনের ছেলে পিন্টু সেন,ধর্মান্তরিত হয়ে যার বর্তমান নাম মো. সুমন; কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার গুলফুল চৌমুহনী এলাকার মো. মোস্তফার ছেলে মো. হাসান ওরফে গুরু ও কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানার মাধবপুর গ্রামের মৃত জাকের হোসেনের ছেলে মো. ফারুক ওরফে পিচ্চি তবারক।
পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, 'ইদু অত্যন্ত ধুরন্ধর প্রকৃতির ব্যক্তি। নিজস্ব একটি ছিনতাইকারী চক্র রয়েছে তার। ভোররাত থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ায় তারা। সুযোগ বুঝে ছিনতাই ও চুরি করে। এরপর ফিরে আসে নিজের বাসায়। দিনভর সেখানে তাদের জন্য মদ, গাঁজা ও ইয়াবার আয়োজন থাকে। সপ্তাহে একদিন নগরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে বেড়াতে পাঠানো হয় তাদের। অভিজ্ঞতা অনুযায়ী তাদের বেতনও নির্ধারিত রয়েছে। ১৪টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কয়েকজন কিশোরও রয়েছে তার চক্রে।'
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইদুর অপকর্মের সহযোগী তার স্ত্রী বিউটি। তার পোষা ছিনতাইকারীদের জন্য রান্নাবান্নার কাজটি করেন তিনি, সরবরাহ করেন মদ-গাঁজারও। ইদু তার চক্রের সদস্যদের কাউকে প্রতিদিন ৩০০ টাকা বেতন দেন, কাউকে সপ্তাহে দেন তিন হাজার। সপ্তাহে একদিন ঘুরানো হয় তাদের দর্শনীয় কোনো স্থানে। ধরা পড়ে কেউ গণধোলাইয়ের শিকার হলে চিকিৎসাও করানো হয় তাদের। জেলহাজত হলে জামিনের ব্যবস্থা করেন। কোনো সদস্যের চিকিৎসা চলাকালে বেতন বন্ধ থাকে না। তার গ্রুপের অন্য সদস্যরা হলো- আলাউদ্দিন, মানিক ও আলাওল। তার গ্রুপের সদস্যরা এ পর্যন্ত কয়েক হাজার বাসায় চুরি ও ছিনতাই করলেও কখনও তাদের নাগাল পায়নি পুলিশ। সূত্র: সমকাল
আপনার মতামত লিখুন :