ডেস্ক রিপোর্ট : 'বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ' শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, দেশে ৫২ শতাংশ নারী বাল্যবিয়ের শিকার। আর বিশ্বে বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। এ পরিসংখ্যান অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
বক্তারা বলেন, বাল্যবিয়ে সামাজিক বঞ্চনার নির্দেশক এবং টেকসই উন্নয়নে অন্যতম অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সরকার থেকে শুরু করে মসজিদের ইমাম পর্যন্ত সবার সমন্বিত উদ্যোগ থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) মিলনায়তনে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। পিকেএসএফ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নাসরীন আহমাদ উপস্থিত ছিলেন। পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে পিকেএসএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ) গোলাম তৌহিদ, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কর্মরত সহযোগী সংস্থাসমূহের নির্বাহী প্রধান, কিশোরী ক্লাবের সদস্য ও সংশ্নিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদসমূহের চেয়ারম্যানবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সেমিনারের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আসাদুজ্জামান নূর বলেন, সম্প্রতি প্রণীত 'বাল্যবিবাহ নিরোধ' আইনের বিশেষ বিধান প্রসঙ্গে সভা-সেমিনার হলেও জোরালো কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি। এটা অনেকের কাছে বিস্ময়কর। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সর্বস্তরে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সরকার থেকে শুরু করে মসজিদের ইমাম পর্যন্ত সবার সমন্বিত উদ্যোগ থাকতে হবে।
'বাল্যবিবাহ নিরোধ' আইনে বিশেষ ক্ষেত্রে নারীদের আঠারো বছর বয়সের নিচে বিয়ের বৈধতা সম্পর্কিত বিশেষ বিধান প্রণয়নে নারীদের মতামত কতটুকু গ্রহণ করা হয়েছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন ড. নাসরীন আহমাদ। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাল্যবিয়ের পক্ষে ও নারীদের জন্য অবমাননাকর মন্তব্য অহরহ করা হয়। তবে এসব সত্ত্বেও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ক্রমান্বয়ে সচেতন হচ্ছে, যা আশার সঞ্চার করে।
ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, পিকেএসএফ বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইতিমধ্যে এসব কার্যক্রমের ইতিবাচক ফল পাওয়া যাচ্ছে বলেও সেমিনারে জানান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান।
আবদুল করিম বলেন, পিকেএসএফ টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। যার মধ্যে অন্যতম লক্ষ্য হলো নারী ও কন্যাশিশুর ক্ষমতায়ন এবং জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকরণ।
সেমিনারে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বেসরকারি সংস্থা টিএমএসএসের নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা বেগমকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধের বিভিন্ন ঘটনা সংবলিত পুস্তিকা 'হোক স্বপ্নের জয়' এবং 'বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭'-এর উল্লেখযোগ্য ধারাসমূহ সংবলিত একটি ফেস্টুন উন্মোচন করা হয়। সূত্র : সমকাল