শিরোনাম
◈ হায়দার আকবর খান রনো মারা গেছেন ◈ ডোনাল্ড লু’র ছয়দিনের সফর শুরু, ভারত ও শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশ আসছেন ১৪ মে ◈ লোহাগড়ায় দুর্বৃত্তের গুলিতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু ◈ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব পাস  ◈ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টানা চার জয় বাংলাদেশের ◈ বন্দি ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি বাহিনীর অমানবিক নির্যাতনের তথ্য-ছবি ফাঁস ◈ গাজার রাফাহজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা ও বোমাবর্ষণ ◈ কোনো ভর্তুকি ছাড়াই নিজস্ব আয় থেকে উড়োজাহাজের মূল্য পরিশোধ করছে বিমান ◈ আওয়ামী লীগ মাঠে না থাকলে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে: ওবায়দুল কাদের ◈ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা শেষ, এখন চলবে ফাইজার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৬ মার্চ, ২০১৮, ১১:৪৫ দুপুর
আপডেট : ২৬ মার্চ, ২০১৮, ১১:৪৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ সুবিধায় বিপ্লব ঘটেছে

ডেস্ক রিপোর্ট : মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বর্তমান সরকারের সময় মুক্তিযোদ্ধারা সবচেয়ে বেশি রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। এই সরকারের সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধায় বিপ্লব ঘটেছে। দুই ঈদ বোনাসের মতো মুক্তিযোদ্ধারা শিগগিরই আরও তিনটি বোনাস পাবেন জানিয়ে তিনি বলেন, তারা স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও বাংলা নববর্ষে উৎসব ভাতা পাবেন। বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে আলোকিত অধ্যায় মহান মুক্তিযুদ্ধ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রাণের মায়া ত্যাগ করে সর্বস্তরের মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের এ আত্মত্যাগ বাঙালি জাতির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় মোজাম্মেল হক এ সব কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী মোজাম্মেল আরও বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বলয় কর্মসূচির আওতায় ২০০৯ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা মাসিক ৩০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ১০ হাজার টাকা করে বছরে দু’টি উৎসব ভাতা চালু করা হয়েছে। সুবিধাভোগী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৪২ হাজার থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ করা হয়েছে। বীরশ্রেষ্ঠদের সম্মানী ভাতা ১২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার, বীর উত্তমদের ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার, বীর বিক্রমদের আট হাজার থেকে ২০ হাজার এবং বীর প্রতীকদের ছয় হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণীর সাত হাজার ৮৩৮ জন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, শহীদ পরিবার ও বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ পরিবারের মাসিক রাষ্ট্রীয় ভাতার পরিমাণ প্রায় ৫২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।

মোজাম্মেল হক বলেন, এখন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা নিজস্ব হিসাব নম্বরে অনলাইনের মাধ্যমে পাঠানো হবে। এ জন্য তাদের আর ব্যাংকের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না। বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের পাশাপাশি নাতি-পুতিদের সরকারি চাকরির কোটাসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের প্রতি বছর এক হাজার ৬০০ টাকা হারে শিক্ষা ভাতা এবং প্রতি কন্যাকে এককালীন ১৯ হাজার ২০০ টাকা বিয়ে ভাতা দেয়া হচ্ছে।

আবাসন সুবিধার বিষয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের গজনবী রোডে নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১ এ ৮৪টি ফ্ল্যাট ও ৭৪টি দোকানের মধ্যে ইতিমধ্যে ৩৩টি ফ্ল্যাট ও ৩৩টি দোকান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ভাতাভোগী সব যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে স্বল্পমূল্যে রেশন দেয়া হচ্ছে। স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসের প্রীতিভোজের জন্য প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধাকে ৭২০ টাকা দেয়া হচ্ছে। আগামী এপ্রিল থেকে মুক্তিযোদ্ধারা বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন। এমনকি প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর সুযোগ রয়েছে। একজন মুক্তিযোদ্ধার জন্য চিকিৎসা বাবদ সর্বোচ্চ আট লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় বহন করে সরকার। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চলাফেরার জন্য হুইল চেয়ার, ক্র্যাচ, লাঠি, কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, জুতা-মোজা, শ্রবণ যন্ত্র, চশমাসহ আনুষঙ্গিক উপকরণ সরবরাহ করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বছরে একবার কক্সবাজারে আবহাওয়া পরিবর্তন/ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতাপ্রাপ্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুবরণ করলে গার্ড অব অনারসহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার মনোনীত স্থানে মরদেহ দাফন বা সৎকারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাসরত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের গৃহস্থালি কাজে পানির বিল ও ১৫০০ বর্গফুট পর্যন্ত নিজস্ব বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ সুবিধা পাচ্ছেন। এমনকি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে দুই বার্নারের একটি চুলার বিল মওকুফ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। হুইল চেয়ারে চলাচলকারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের মোবাইল ফোন দেয়া হয়েছে। এ খাতে জনপ্রতি মাসিক ১১০০ টাকা থেকে ১৯০০ টাকা পর্যন্ত বিল দেয়া হচ্ছে। সরকারের দেয়া পরিচয়পত্র দেখিয়ে রেলওয়ের প্রথম শ্রেণীতে বিনা ভাড়ায় যাতায়াত সুবিধা পেয়ে থাকেন। বিমানের অভ্যন্তরীণ রুটে এবং আন্তর্জাতিক যে কোনো রুটে (ইকোনমি) বছরে একবার যাতায়াত সুবিধা পেয়ে থাকেন। বিআরটিসির বাস এবং বিআইডব্লিউটিএ’র জলযানে প্রথম শ্রেণীতে বিনা ভাড়ায় যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধারা। এমনকি সেতু পারাপারের ক্ষেত্রে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে তাদের বহনকারী গাড়ির টোল মওকুফ সুবিধা পেয়ে থাকেন। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা পর্যটন কর্পোরেশনের হোটেল ও মোটেলে সপরিবারে সর্বোচ্চ দুই রাত বিনা ভাড়ায় বছরে একবার থাকার সুবিধা পেয়ে থাকেন। জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে বিনা ভাড়ায় ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অবস্থানের সুবিধা পান।

বিদেশি বন্ধুদের সম্মাননা দেয়া হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও সংগঠনকে সম্মাননা দেয়া হচ্ছে। এ কার্যক্রমের আওতায় ভারতের সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ তুলে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া কয়েক দফায় ৩৩৮ জন বিদেশি ব্যক্তি ও সংগঠনকে সম্মাননা দেয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সাতজনকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দুই হাজার ২৭৩ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রতি জেলা/উপজেলায় বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় ৯৮২ বর্গফুটের আট হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ হবে বলে জানান মোজাম্মেল হক। সূত্র : যুগান্তর

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়