নিজস্ব প্রতিবেক : সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবীদের অবসরের বয়সসীমা আপাতত বাড়ানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অবসরের বয়সসীমা বাড়ানো হলে নিচের স্তরে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটে এবং নতুনদের চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ কমে যায়।
জাতীয় সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমামের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরিতে অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। ভবিষ্যতে এ বিষয়টি দেখা যাবে। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন অবসরসীমা বাড়ানো হয়নি। একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৬০ বছর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট ছিল, আওয়ামী লীগ সরকার সেমিস্টার সিস্টেম করে দেয়ায় এখন তেমন সেশনজট নেই। ফলে চাকরিতে প্রবেশের জন্য এখন অনেক সময় পাচ্ছে। তাই এখন আর অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে একসময় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ছিল ২৫ বছর আর অবসরের বয়স ৫৫ বছর। স্বাধীন বাংলাদেশের শুরুর দিক থেকে চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ২৭ বছর আর অবসরের বয়স ৫৭ বছর করা হয়। এ অবস্থা প্রায় ২০ বছর ধরে চলে।
১৯৮০-এর দশকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজটের ফলে শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ স্নাতক, বিশেষত স্নাতকোত্তর শিক্ষা ২৭ বছর বয়সের মধ্যে শেষ করতে পারছিল না। বিষয়টি অনুধাবন করে নতুন গণতান্ত্রিক সরকার ১৯৯১ সালে ১৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স তিন বছর বাড়িয়ে ৩০ বছরে উন্নীত করে। তখনও অবসরের বয়স ৫৭ বছরই থেকে যায়।
যুক্তিসঙ্গতভাবে তখন ১৩তম বিসিএস দলের এবং এর সমসাময়িক সরকারি চাকরিজীবীদের অবসরের বয়সও তিন বছর বাড়িয়ে ৬০ বছর করা দরকার ছিল। কিন্তু সরকার ১৩তম বিসিএসে উত্তীর্ণদের অবসরের বয়স হওয়ার অনেক আগেই ২০১২ সালে দুই বছর বাড়িয়ে অবসরের বয়স ৫৯ বছরে উন্নীত করে। অল্পদিনের মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স ৬০ বছর করা হয়।