শিরোনাম
◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয়

প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৪:১০ সকাল
আপডেট : ২৭ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৪:১০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কলকাতায় বাংলাদেশের ভিসা পেতে নাকাল ভারতীয়রা

মাছুম বিল্লাহ : দালালচক্রের কারণে ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন থেকে ভিসা নিতে গিয়ে নাকাল হচ্ছেন ভারতীয়রা। ভিসা নিতে দুই থেকে তিনদিন পর্যন্ত লাইনে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ভিসার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে বেশ কয়েকজনকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালেও যেতে হয়েছে বলে ভারতীয় দৈনিক যুগশঙ্খের খবরে বলা হয়েছে।

শুক্রবার পত্রিকাটিতে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে বা বেড়াতে, আবার কখনও প্রয়োজনের খাতিরে মাঝে মধ্যেই ভারত থেকে বাংলাদেশে যান বহু মানুষ। কিন্তু পার্ক সার্কাসে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনে বাংলাদেশে যাওয়ার ভিসার আবেদন করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ ভারতীয় নাগরিক।

পত্রিকাটি লিখেছে, অনলাইনে ভিসার আবেদনপত্র পূরণ করে জমা দিতে হচ্ছে। কিন্তু কখনও রাত থেকে,আবার ভোর থেকে ভিসার কাউন্টারে দাড়িয়ে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা লাইন দিয়েও ৫০ থেকে ১০০ মিটার এগোতে পারছেন না অনেকে। ভিড়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির জেরে অনেকেই অসুস্থ পয়ে পড়ছেন। অভিযোগ, কেউ টাকার বিনিময়ে লাইন কিনছেন, অথবা দালালের মাধ্যমে টাকা দিয়ে নিজের ভিসা করিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু একমাত্র লাইনের ভিড়ে অসুস্থ হযে পড়লে তাকে তুলে হাসপাতালে ভর্তি করানো ছাড়া আর কোনও ভূমিকাতেই দেখা যাচ্ছে না পুলিশকে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদনে কোনও টাকা লাগে না। কিন্তু লাইনে দাড়ানো মানুষের অভিযোগ,টাকার বিনিময়ে স্থানীয় কিছু দালাল আগের দিন রাত থেকেই লাইন দিচ্ছেন। তারা বাংলাদেশগামী যাত্রীদের কাগজপত্র নিয়ে নিজে লাইন দিয়ে তার ভিসা করিয়ে দিচ্ছেন। তার বিনিময়ে কেউ ৫০০, কেউ ১০০০, আবার কেউ ২০০০ টাকাও নিচ্ছেন। আবার লাইনও বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়। কিন্তু যাবতীয় কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও টানা দু’তিনদিন লাইনে দাড়িয়ে থাকার পরও খালি হাতে ফিরে আসতে হচ্ছে বৈধ আবেদনকারীদের।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের বেলেঘটা থেকে খুলনা যাওয়ার জন্য আবেদন করতে ভোর ৫টায় লাইন দিয়েছিলেন সুব্রত অধিকারী। ডেপুটি হাই কমিশনে গিয়ে দেখেন, আগের দিন রাত থেকে লাইন দিয়ে আছেন আরও জনা কুড়ি। তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন দ্রুত আবেদনপত্র জমা দিয়ে সকাল সকাল বাড়ি ফিরে যাবেন। কিন্তু তিনি দেখলেন, লাইন ক্রমশ নিজে নিজেই লম্বা হয়ে যাচ্ছে। তার কথায়, কিছু লোকজন নিজে থেকেই লাইন অন্য লোককে ছেড়ে দিচ্ছেন। তার বিনিময়ে সঙ্গে সঙ্গে টাকাও পেয়ে যাচ্ছেন। লাইনে অপেক্ষারত লোকজন এই দৃশ্য দেখে চিৎকার করে উঠলে ‘উনি আমার আত্মীয়’ বলে লোকজনকে বোঝানোর চেস্টা চলছে। এভাবে পরপর তিন দিন গিয়ে তবে নিজের ভিসা করাতে পেরেছেন তিনি। কিন্তু এখনও স্ত্রীর ভিসা করানো বাকি।

একই অভিজ্ঞতা তিলজলা থেকে আসা প্রবীণ শেখ ইসমাইলেরও। চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য ভিসা করাতে গিয়েছিলেন তিনি। তার অভিযোগ, সামনের দিকে কিছু লোকজন ক্রমাগত ঢুকছেন, বেরোচ্ছেন। লোকজন চেঁচালে তারা সরে যাচ্ছেন। আবার কিছুক্ষণ বাদেই ফিরে আসছেন। বারবার কর্তব্যরত ডেপুটি হাই কমিশনের নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কোনও লাভ হচ্ছে না। কাছাকাছি কোনও শৌচালয়ও নেই। ভিসা নিতে আসা যাত্রীদের আরও অভিযোগ, বিগত দু’বছর ধরে অনলাইনে ভিসার আবেদনপত্র পূরণ করার প্রক্রিয়া চালূ হওয়ার পর থেকে সক্রিয় হয়েছে দালাল চক্র। ডেপুটি হাইকমশনের আশেপাশের গলিতে গজিয়ে উঠেছে বেশ কিছু কম্পিউটার সেন্টার। যেখানে অনলাইনে ভিসা ফর্ম পূরণ থেকে শুরু করে ভিসা পর্যন্ত করিয়ে দিচ্ছে দালালরা।

উল্লেখ্য, কলকাতার বেনিয়াপুকুর থানা এলাকার আওতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরণিতে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন। ওই থাকার এক পুলিশকর্তার বক্তব্য, কেউ নির্দিষ্ট অভিযোগ দিলে তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে। বাংলাদেশে যেতে ইচ্ছুক যাত্রীদের বার বার দালালের খপ্পরে না পড়তে অনুরোধ করা হচ্ছে। তার আরও দাবি, লাইনে বাইরে থেকে লোক এলে ঢুকতে যাতে না দেওয়া হয়, তার জন্য কর্তব্যরত পুলিশের পক্ষ থেকে সকলকে বোঝানো হয়। কিন্তু তার পরেও যদি মানুষ তা না মানতে চান, তাহলে কিছুই করার নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়