শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৯:০৩ সকাল
আপডেট : ২৩ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৯:০৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এশিয়ার একমাত্র পানি জাদুঘর কলাপাড়ায়

মাইকেল : পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা গ্রামে কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে ‘পানি জাদুঘর’। এটি এশিয়া মহাদেশের একমাত্র পানি জাদুঘর।

২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের সহায়তায় স্থাপিত হয় এ ‘পানি জাদুঘর’। এরপর যতই সময় গড়িয়েছে ততই এ জাদুঘরে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আগমন বেড়েছে। এ জাদুঘরের একটি কক্ষে স্বচ্ছ কাচের জারে সংরক্ষণ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশের ৮৭টি নদনদীর পানি। শুধু এসব নদনদীর পানি দেখাই নয়, এগুলোর ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারণাও মেলে ওই জাদুঘরে গেলে।

সরেজমিন দেখা গেছে, দোতলা টিনের ঘরের সামনে বালুর ওপর রাখা রয়েছে একটি নৌকা। এতে মানবসৃষ্ট নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে প্রায় শুকিয়ে যাওয়া নদনদীতে নৌকা আটকে থাকার বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ঘরটির দোতলায় প্রায় ৫০০ বর্গফুটের পানি জাদুঘরে ও বিভিন্ন স্থানে সারি সারি সাজানো রয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন নদনদীর পানি ও গ্রামীণ বাংলার মানুষের জীবিকা অর্জনের নানা উপকরণ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- মাছ শিকারের ঝাকি জাল, খুচনি জাল, নৌকা, চাই, পাল্লা, কাঁকড়া শিকারের চাই ও তাঁত বোনার মেশিন।

এ ছাড়া আছে কৃষিজমির উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের জন্য মাটির তৈরি হাড়ি, বাঁশের তৈরি ডোলা, মুড়ি ভাজার তলছা এবং ঝাড়রা মাটির তৈরি খাদ্য রান্নার হাঁড়ি, পাতিল, খাাবারের থালা-বাসন, পিতলের তৈরি থালা, বাটি, বদনা, মগিসহ নানা উপকরণ। দেয়ালে শোভা পেয়েছে দেশীয় খাল ও নদনদীর ছবি, বিভিন্ন্ প্রজাতির মাছ, জেলে এবং কুমার তাঁতিসহ সর্বস্তরের মানুষের জীবনধারণ ও জীবিকা অর্জনের নানা দৃশ্য।

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ সূত্রে জানা গেছে, পৃথিবীর পাঁচ ভাগের তিন ভাগই পানি, এর মধ্যে মিঠাপানির পরিমাণ মাত্র তিন থেকে চার শতাংশ। বাকি ৯৬-৯৭ শতাংশ পানি বরফ ও নোনা পানি। বিশ্বের প্রাণী ও উদ্ভিদ জগতের সব ধরনের কার্যক্রম সচল রাখতে মিঠা পানির প্রয়োজনীয়তা অনেক। বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশে মিঠা পানির পরিমান বেশি। এ দেশের মিঠা পানির মূল উৎস প্রবাহমান নদ- নদী ও বৃষ্টি। কিন্তু নানা কারণে নদনদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় শুষ্ক মওসুমে আমাদের দেশের দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পানি জাদুঘরের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা জানান, জাদুঘরে পর্যটকদের আগমন বাড়ছে। আগত পর্যটকদের নদনদীর সৃষ্টির ইতিহাস থেকে শুরু করে বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে টিভির পর্দায় ভিডিও প্রদর্শন করিয়ে স্পষ্ট ধারণা দেয়া হয়। এত পর্যটকদের ভেতর নদী বিষয় সচেতনা সৃষ্টি হচ্ছে। এখন প্রতিদিন জাদুঘর পরিদর্শনে কমপক্ষে দেড় শ’ পর্যটক আসেন।

জাদুঘর রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা : জাদুঘর পরিচালনা কমিটির সদস্য এনজিও আভাসের প্রতিনিধি মো: মনিরুল ইসলাম জানান, পরিচালনা কমিটিতে আছেন উপকূলীয় জনকল্যাণ সঙ্ঘের সভাপতি জয়নাল আবেদিন, সাধারণ সম্পাদক মো: শাহআলম মোল্লা, কোষাধ্যক্ষ হালিমা বেগম এবং সাধারণ সদস্য হিসেবে আছেন নাসিমা বেগম ও ফাইমা বেগম। অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে কমিটিতে আছেন শমসের আলী। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীর জন্য খোলা থাকে।

শিক্ষার্থীদের জন্য জাদুঘরে প্রবেশ ফি জনপ্রতি ১০ টাকা। অন্য দর্শনার্থীর জন্য ফি ২০ টাকা। পর্যটকদের জনপ্রতি ১০০ টাকা। প্রতি মাসে মাসে গড়ে ১০০০ হাজার টাকা আয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন অ্যাকশন এইডের ফেলো ও ফি আদায়কারী লিপি মিত্র।
পানি জাদুঘর দেখভালের দায়িত্ব থাকা স্থানীয় এনজিও আভাসের নির্বাহী পরিচালক রহিমা সুলতানা কাজল জানান, পানি জাদুঘরটি যদি সরকার কুয়াকাটায় স্থানান্তর করে তবে দর্শনার্থী আরো বাড়বে।

যেভাবে যাবেন যাদুঘরে : ঢাকা থেকে লঞ্চে সরাসরি কলাপাড়ার পাশের উপজেলা আমতলীতে যেতে হবে। সেখান থেকে আধা ঘণ্টায় পরপর বাস কিংবা মোটর সাইকেলে কলাপাড়ার পানি জাদুঘরে পৌঁছা যায়। বিকল্প পথে ঢাকা থেকে লঞ্চে বরিশাল এসে সেখানে থেকে বাস কিংবা মাইক্রোবাসে সরাসরি পানি জাদুঘরে যাওয়া যাবে। এ ছাড়া বাসে ঢাকার গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে কুয়াকাটার উদ্দেশে ছেড়ে আসা বিভিন্ন বাসে সরাসরি কলাপাড়ার পানি জাদুঘরে যাওয়া যায়।নয়াদিগন্ত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়