শিরোনাম
◈ শ্রীলঙ্কার কা‌ছে আফগা‌নিস্তান হে‌রে যাওয়ায় সুপার ফো‌রে খেলার সু‌যোগ পে‌লো বাংলাদেশ ◈ বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে টিউলিপের মিথ্যাচার, নতুন সংকটে স্টারমার: ডেইলি এক্সপ্রেসের রিপোর্ট ◈ শুধু অতীতের নয়, বর্তমানের দুর্নীতি থামাতেও নজর দিতে হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ◈ বাংলাদেশ ও চীন সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে একসাথে এগিয়ে যাবে : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ সাফ চ‌্যা‌ম্পিয়নশী‌পে নেপালকে ৪-০ গো‌লে হারা‌লো বাংলাদেশ ◈ শ্রীলঙ্কার প্রতি বাংলা‌দে‌শের সমর্থন, চোখ এড়ায়নি লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের ◈ আফগানিস্তান-শ্রীলংকা ম্যাচের ফল যেমন হলে লাভ বাংলাদেশের ◈ নির্বাচনী দায়িত্বে অপরাধের সাজা বাড়ছে: অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন ◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে নয় বিএনপি : সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ২২ জানুয়ারী, ২০১৮, ১২:২১ দুপুর
আপডেট : ২২ জানুয়ারী, ২০১৮, ১২:২১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিভিন্ন পয়েন্টে ইয়াবার চালান পৌঁছে দেয় কিশোর শাওন

ডেস্ক রিপোর্ট : সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শাওন ছোটবেলা থেকেই খুব চটপটে স্বভাবের। বয়স এখন মাত্র ১৪। মা এবং বড় বোনের সাথে রাজধানীর যাত্রাবাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকে। আট বছর আগে বাব-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়েছে। তখন থেকে শাওন মা এবং তার বড় বোনকে নিয়ে থাকে। মা-বোন দুজনই এফডিসিতে কাজ করেন ফিল্মের এক্সটা হিসেবে।

মা ও বোনের জোর চেষ্টা শাওন লেখাপড়া করে মানুষ হোক। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় অনিহা শাওনের। দশ বছর বসয় থেকেই স্কুল ফাঁকি দিতে শুরু করে। স্কুলের নাম করে বাইরে আড্ডা দেওয়া তার নিত্যদিনের অভ্যাসে রূপ নেয়। কারণে অকারণে মায়ের কাছে টাকার বায়না ধরে। টাকা দিতে অসম্মতি জানালে বাসায় সে নিয়মিত চিত্কার, চেচামেচি, গালমন্দ ও ভাঙচুর চালায়। এমনকি মা-বোনের গায়ে হাত তুলতেও দ্বিধা করে না। রাগ করে নিজের শরীরে নিজে ব্লেড চালায়। জানা যায়, পাড়ার বন্ধুদের সাথে মিশে সে তখন নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবন শুরু করে। রাজধানীর একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিত্সারত শাওনের মা এভাবেই বর্ণনা করেন তার ছেলের অন্ধকার জগতে পা বাড়ানোর গল্প।

প্রায় বছর দুয়েক আগে শাওন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তার মা তাকে আশেপাশে অনেক খুঁজেছেন। শাওনের বক্তব্য মতে, সে সময় সে তার মাকে দুবার দেখেছে। তবে দেখেও পালিয়ে গেছে। পালানোর পর শাওন প্রথমে বছরখানেক টেম্পুর হেলপার হিসেবে কাজ করেছে। আর সেসময়ই ওস্তাদ ড্রাইভারের সাথে ইয়াবা সেবন শুরু করে। চতুর শাওন কিছুদিনের মধ্যে ড্রাইভিং শিখে নিজেই ড্রাইভার হয়ে যায়। ফলে তার রোজগারও বেড়ে যায়। সাথে বেড়ে যায় ইয়াবা সেবনের পরিমাণও।

শাওনের কথায়, সেসময় প্রতিদিন নেশার পিছনে তার খরচ হতো ৫’শ থেকে ৬’শ টাকা। হাত বাড়ালেই সে পায় ইয়াবা। টেম্পুর মালিকরা তার মতো হেলপার বা ড্রাইভারদের ইয়াবা সেবনে উত্সাহ যোগায় যেন তারা কাজ ছেড়ে না যায়। এমনকি তারা ইয়াবা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে দিতেও এদেরকে ব্যবহার করে থাকে।

দু’মাস আগে শাওন মায়ের কাছে ফিরে এলে মা, বোন দু’জন মিলে তাকে চিকিত্সার জন্য নিয়ে যেতে চাইলে সে প্রথমে আপত্তি জানায়। যদিও পরে সে রাজি হয় এবং চিকিত্সা কেন্দ্রে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে ইয়াবার ছাড়ার উপসর্গ কাটিয়ে উঠলেও নিজের ভবিষত্ নিয়ে চিন্তিত। শাওন এখনো ভয় পাচ্ছে যে আদৌও ছাড়তে পারবে কি-না।

শাওন জানায়, তার এলাকায় নিয়মিত ইয়াবার আড্ডা বসে। রাজনৈতিক বড় ভাইয়েরা, এক শ্রেণির আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং আবগারির লোকজন থাকে এসব আড্ডায়। মাঝে মাঝেই শাওনের ডাক পড়বে সেখানে। না গেলে বা ইয়াবা সেবন না করলে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হতে পারে বলে শঙ্কায় রয়েছে সে।

অন্যদিকে শাওন জানায়, রাজধানীতে কোথায় কোথায় ইয়াবা পাওয়া যায়, সেই স্থানগুলো ভালোভাবেই তার চেনা জানা। ব্যবসার সাথে জড়িত বড় ভাইয়েরাও তাকে ভালোভাবে চেনে জানে। বয়সে ছোট হলেও খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই অন্ধকার জগত্ রপ্ত করে ফেলেছিল শাওন। সে বলল, ইয়াবার রাজ্যে আমরা হাবুডুবু খাচ্ছি। আমার মতো আরো অনেক কিশোর এই ভুল পথে হাটছে। আমাদের ব্যবহার করে বড় ভাইয়েরা নিজেদের কার্যসিদ্ধি করছে। জানি না, এখান থেকে আদৌ ফিরে আসতে পারবো কি-না!ইত্তেফাক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়